ইবাদতের সঙ্গে চলছে মুসল্লিদের রান্না
শুক্রবার জুমা নামাজের মধ্য দিয়ে তুরাগ তীরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা। দেশের ১৬টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন ইজতেমায়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বুধবার ইজতেমা মাঠে মুসল্লি আসতে শুরু করেন তুরাগ তীরে। থাকবেন রোববার পর্যন্ত। আর এই পাঁচদিনের জন্য রান্নাও সেরে নিচ্ছেন মাঠেই।
শনিবার সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে যখন মুসল্লিরা মনোযোগ দিয়ে ইজতেমার বয়ান শুনছেন, অন্যদিকে তাদেরই কয়েকজন রান্নাবান্নায় ব্যস্ত।
মুকুল হাসানের নেতৃত্বে ডিসেম্বরে রংপুর থেকে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে এসেছিল ৩৫ জনের একটি জামাত দল। সেখান থেকে শুক্রবার সরাসরি ইজতেমা মাঠে। প্রতিদিন বাইরের খাবার কিনে খেতে খরচ বেশি পড়বে বিধায় নিজেরাই রান্না করে তিন বেলা খাচ্ছেন।
মুকুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ৩৫ জনের মধ্যে আমরা ৩-৪ জন রান্না করতে পারি। বাকিরা কোটা-বাটার কাজ করি। ফজর নামাজের পর আমরা যখন বয়ান শুনি ৪-৫ জন তখন থেকেই সকালের খাবার রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দুপুরে আরেক গ্রুপ আর রাতে বাকিরা রান্নার কাজে অংশ নেয়। আমরা সবাই মিলেমিশে নিজের মনে করে রান্না করি। প্রতি বেলায় একসঙ্গে খাই।
কাকরাইল মসজিদ থেকে ইজতেমা মাঠে আসার আগেই বস্তা ভরে বাজার করে নিয়ে এসেছিল মুকুলের জামাত দলটি।
সকালে তাদের খাবারের মেন্যুতে রয়েছে খিচুড়ি ও ডিম ভাজা। দুপুরে ভাত-ডাল, বেগুন দিয়ে মাছের তরকারি। রাতে ভাত-ডাল, সবজি আর ডিমের দোপেঁয়াজু। সব মিলে দিনে খাবার খরচ লাগে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে সবাইকেই আলাদাভাবে লাকড়ি কেনার টাকা দিতে হয়। অনেকে আবার রান্নার জন্য ছোট সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস নিয়ে ইজতেমা মাঠে এসেছেন।
নাদের হাসান নামে এক মুসল্লি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তো এখানে খেতে আসিনি। দ্বীনের জন্য এসেছি, গুনাহ মাফের জন্য এসেছি। তবে সুস্থভাবে ইবাদত করার জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি। এতকিছুর পর যখন সবাই একসঙ্গে খাবার খাই খুব ভালো লাগে।
ইজতেমা মাঠের প্রায় প্রতিটি কোনেই রান্নার আয়োজন চোখে পড়ে। রান্নার আগুনে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য মাঠের বিভিন্ন কোনে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি রয়েছে।
রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হবে।
এআর/বিএ/আরআইপি