ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই প্রার্থীর কাছেই!
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার শেষ মুহূর্তে অধিকাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই তার কাছে। তিনি একবার বলছেন ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৩টি। আরেকবার বলছেন ১৭৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়াও বিএনপি থেকে এ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় অনেক নেতা মোট কতটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ তার সুস্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদরে অবস্থিত অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের জবাবে জাগো নিউজের কাছে দলটির মেয়রপ্রার্থীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে এমন অভিযোগ করেন। তবে সুনির্দিষ্টভাবে মোট কতটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মিডিয়া উইংয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেনকে। কতটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে দলটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচন সনম্বয় কমিটির সদস্যসচিব ফজলুল হক মিলন ভালো বলতে পারবেন।’
পরে মিলনের কাছে জানতে চাইলে তার কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন ভালো বলতে পারবেন। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।’
পরবর্তীতে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে ৫৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তালিকা দিয়েছিলাম। কয়েকটি কেন্দ্রের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসির কাছে লিখিত দেয়া আছে। সেখানে উল্লেখ করেছি।’
তবে এমন বক্তব্যের ক্ষণিক পরেই সুর পাল্টিয়ে তিনি বলেন, ‘২৭টি ওয়ার্ডের মোট ১৭৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ থাকা স্বত্বেও নির্বাচনের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের এই প্রার্থী।
এদিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকেও সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়েছে মোট ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ১৩৭টি অতি স্পর্শকাতর ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে আমাদের নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা আরও বেশি। সহিংস সন্ত্রাসময় পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো ধরনের তৎপরতা নেই এবং নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অবশ্য সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কেন্দ্রের নাম বলেত পারেননি তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ভোটারদের ভাষ্যমতে, কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও তারা আশা করছেন নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা ও সরকারের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
এমএম/জেডএ/পিআর