বিশ্বের কোথাও রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের নজির নেই
সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, সংলাপ ও বাস্তবতা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, দেশের মানুষ শান্তি চায়। সন্ত্রাস বন্ধ হলেই স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায়বিচার প্রয়োজন। রাজনৈতিক দাবি আদায়ের জন্য একটি গোষ্ঠী আন্দোলন করছে। তাদের কিছু দাবি রয়েছে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চান, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার চান। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। তাদের ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনে বিজয়ী হতে হবে। সবার জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা না গেলে চলমান সহিংসতা বন্ধ হবে না। আর সহিংসতা বন্ধ করা না গেলে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে।
তারা বলেন, বিশ্বের কোথাও রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের নজির নেই। যারা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস করছে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। আগে দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এরপর সংলাপ বা সমঝোতার প্রশ্ন আসবে। কারও কথায় কান না দিয়ে কঠোর হস্তে জামায়াত-শিবির এবং জ্বালাও-পোড়াওকারীদের দমন করতে সরকারকে পরামর্শ দেন বিশিষ্ট নাগরিক সমাজের অনেকেই।
শনিবার রাজধানীর হোটেল লেক শোর রিজিওনাল এন্টি টেরোরিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আরএটিআরআই) আয়োজিত সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, সংলাপ ও বাস্তবতা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরএটিআরআইর নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) একে মোহাম্মদ আলী শিকদার। বৈঠকে সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিনাত হুদা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, দেশের বিরাজমান অচলাবস্থা রাজনৈতিক সংকটের ফসল। আর এর পেছনের মূল কারণ একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার। সরকার সেটা না করায় একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তিনি বলেন, যারা এই দাবি তুলেছে তাদের সঙ্গে বৃহৎ জনগোষ্ঠী রয়েছে। দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ একে সমর্থন দিয়েছে বিভিন্ন নির্বাচনে। এই শক্তিটি যদি শান্তিতে না থাকে, তাদের মাঝে ক্ষোভ থাকে, তাহলে তাদের দমন করা যাবে না। দেশের বিরাজমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংলাপ বা সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন এই জাপা নেতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আআমস আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জামায়াতের নেতাদের যাদের বিচার হচ্ছে তাদের বাঁচাতে হবে। তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য যদি হয় এদের বাঁচানো তাহলে ১৬ কোটি মানুষ তা প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, আমাদের চেতনার ২১ ফেব্র“য়ারির দিনেও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শহীদ মিনারেও বোমা ছোড়া হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন- কোন স্বার্থে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে কেন মারা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী জাফর ইমাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, বিএনপির আরেক সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুল হক জামাল , বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহম্মদ মহসীন, অভিনেত্রী শমী কায়সার প্রমুখ। সূত্র : যুগান্তর
এসএইচএ/এমএস