ডিসিসি নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ শুরু
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়নসহ, ওয়ার্ড ভিত্তিক ভোটার তালিকা বিন্যাসের কাজেও হাত দিয়েছে ইসি।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের মাঠ পর্যায়ের কাজ গুছিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই ভোটকেন্দ্র নির্ধারণসহ ওইসব কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ সব কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন পাঠাতে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বুধবার নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ দ্রুত মাঠ পর্যায়ের কাজ গুছিয়ে নেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, সেই নির্দেশনার অংশ হিসেবেই এসব কাজ গুছিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব সামসুল আলম।
তিনি বলেন, সিইসির নির্দেশনা মোতাবেক আমরা এ তিন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।
অন্য একজন উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, মূলত তফসিল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়। তবে এখন থেকেই কাজ শুরু না করলে পরে হিমশিম খেতে হবে। কেননা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ৪২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৩ জন ভোটার রয়েছে। এত ভোটারের এলাকায় ভোটকেন্দ্রও বেশি প্রয়োজন। আর ভোটকেন্দ্রগুলো সাধারণত স্কুলেই করা হয়। তাই কোন স্কুল কী অবস্থায় রয়েছে এগুলো সরেজমিন খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এজন্যই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরেজমিন খোঁজ নিয়ে কেন্দ্র বাছাইয়ের জন্য প্রাথমিক তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ভোটার বেশি হওয়ায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাও বেশি নিয়োগ করতে হয়। আর এসব কর্মকর্তা সাধারণত স্কুল, কলেজের শিক্ষক, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে থেকে বাছাই করা হয়। তাই সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ লোকবল আছে, কাদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে, তার একটি প্যানেল তৈরি করতে হয়। যে প্যানেল থেকে পরবর্তীতে কাটছাঁট করে তালিকা চূড়ান্ত করে কমিশন। তাই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল তৈরি করেও কমিশনে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ওয়ার্ড ভিত্তিক ভোটার তালিকা তৈরি করাসহ কমপেক্ট ডিস্ক (সিডি) করতেও বলা হয়েছে।
সর্বশেষ ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে প্রায় ৩৮ লাখ ভোটারের জন্য ভোটকেন্দ্র ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্ধারণ করতে হয়েছিলো ইসিকে। ২০১২ সালের স্থগিত ওই নির্বাচনে জন্য ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৮৪টি সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিলো। দক্ষিণে নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৮৭৩ টি ভোটকেন্দ্র। দুই সিটিতে সে সময় ভোটকক্ষ ছিলো ১০ হাজার ১৫৬টি। যারজন্য এজন্য প্রায় ৪১ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন পড়েছিলো। ভোটার বেড়ে যাওয়ায় এবার ভোটকেন্দ্র এবং সে অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়বে।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে আরো জানা গেছে, আগামী দু’একদিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বৈঠকের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। কেন না, জুনের মধ্যে ডিসিসি নির্বাচন সম্পন্ন করতে হলে এইচএসসি পরীক্ষার কিছু বিষয়ে পরীক্ষা পেছানোর প্রয়োজন পড়বে। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা অনুযায়ী নির্বাচন কখন করা যাবে সে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। এরই মধ্যে সিইসি গণমাধ্যমে বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় রোজা ও এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করে দিতে পারলে সেই অন্তবর্তী সময়েই নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
ডিসিসিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিলো ২০০২ সালে ২৫ এপ্রিল, এর মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালের ১৪ মে। এরপর ২০১২ সালে তফসিল ঘোষণা করেও আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় নির্বাচন করতে পারেনি ইসি।
এসআরজে