শ্রমিক অভিবাসনে কাফালা পদ্ধতি বাতিলের দাবি
অভিবাসন এবং উন্নয়ন বিষয়ক বৈশ্বিক ফোরামের (জিএফএমডি) মাধ্যমে শ্রমিক অভিবাসনে কাফালা পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো। বুধবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক ইউনিয়ন ট্রেড ইউনিয়ন (আইটিইউসি) বাংলাদেশ কাউন্সিল আয়োজিত অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
রাজধানীর শেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলেনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অভিবাসন এবং উন্নয়ন বিষয়ক বৈশ্বিক ফোরামের মাধ্যমে শ্রমিক অভিবাসনে কাফালা পদ্ধতি বাতিলসহ মোট ১২টি দাবি তোলা হয়। লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে দাবিগুলো পাঠ করেন বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন।
দাবিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দাবি হলো- বৈদেশিক কর্মসংস্থান ইস্যুতে সমঝোতা স্মারকের পরিবর্তে আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি নিশ্চিতকরণে দৃশ্যমান কর্মসূচি গ্রহণ, যা মৌলিক শ্রম অধিকার নিশ্চিত করবে এবং তার অনুলিপি সর্ব সাধারণের জন্য সহজলভ্যকরণ; গ্রহীতা ও প্রদানকারী সকল দেশকে আইএলও এর জোরপূর্বক শ্রম কনভেনশন ২০১৪ অনুস্বক্ষর করতে হবে।
এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে কর্মরত অভিবাসী মহিলা গৃহশ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও অবৈধ অভিবাসন এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে কর্যকর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ; শ্রম অভিবাসন বিষয়ক খরচ সর্বনিম্ন পর্যায়ে কামিয়ে আনা; শ্রম অভিবাসন বিষয়ে সরকারের দায়িত্ব ও সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বিষয়ক জাতীয় আইন ও নীতিমালা প্রয়োগ; অভিবাসী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে ফলপ্রসূ শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অন্যতম।
সংবাদ সম্মেলনে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় জিএফএমডির যাত্রা শুরু হচ্ছে। এতে অভিবাসী শ্রমিকদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সুশাসন বিষয়ক উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেবে জিএফএমডি। এই লক্ষ্যে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর নবম সুশীল সমাজ দিবস পালন করা হবে।
আইটিউসি বাংলাদেশ কাউন্সিলের মহাসচিব দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, কাফালা হচ্ছে শ্রমিকদের কাজের চুক্তি পদ্ধতি। যার মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করা হয়। বাংলাদেশের যত শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে তার ৫০ শতাংশ শ্রমিকই কাফালা পদ্ধতিতে রয়েছে। যে পদ্ধতি তাদের জন্য খুবই কষ্টকর।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিক অভিবসনের কাফালা পদ্ধতিকে বাতিল করতে হলে সরকারকেই সজাগ হতে হবে। কারণ সরকার যদি শ্রম আইন প্রণয়ন করতে পারে তাহলে কেন বিশেষ আইনের মাধ্যমে এই পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুল মুকিত খান, সাধারণ সম্পাদক এ আর চৌধুরী রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/আরএস/এমএস