ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

পয়লা মার্চ থেকে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা শুরু

প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পয়লা মার্চ থেকে দেশব্যাপী তৃতীয়বারের মত সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০১৫ প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে ওই দিনই সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানী ঢাকায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে একটি র্যালি বের করা হবে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শহর ও গ্রামের শিক্ষার বৈষম্য নিরসন এবং অবহেলা-অনাদরে বেড়ে ওঠা প্রতিভাকে খুঁজে বের করে বিকশিত করার লক্ষ্যে এ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন।

৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি এই তিন গ্রুপে ভাগ করে প্রতিযোগিতা হবে। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

চারটি বিষয়ে প্রতিযোগিতা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগ্রহী প্রতিযোগীকে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে হবে।

নাহিদ বলেন, প্রতিযোগিতার বিষয়সমূহ হচ্ছে- ভাষা ও সাহিত্য, ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির দৈনন্দিন বিজ্ঞান ও নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ।

তিনি বলেন, প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের মেধা যাচাইয়ের প্রতিযোগিতা হবে। প্রতি পর্যায়ে ৩ গ্রুপে ৪টি বিষয়ে একজন করে সেরা শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ উদ্যোগে আয়োজন করবে এবং সেরা ১২ জনের নাম উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রেরণ করবে। প্রতি উপজেলার সেরা ১২ প্রতিযোগী জেলা পর্যায়ে, জেলার সেরা ১২ জন বিভাগীয় পর্যায়ে ও বিভাগের সেরা ১২ জন জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। এভাবে ৭ বিভাগের সেরা ৮৪ প্রতিযোগী ও ঢাকা মহানগরের সেরা ১২ জনসহ মোট ৯৬ জনকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হবে। এখান থেকে ৪ বিষয়ের একজন করে ৩ গ্রæপের মোট ১২ জন শিক্ষার্থীকে বছরের সেরা মেধাবী হিসেবে নির্বাচন করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায়ের সেরা ১২ জনকে এক হাজার টাকা করে, জেলা পর্যায়ের সেরা ১২ জনকে দেড় হাজার টাকা করে ও বিভাগীয় পর্যায়ের সেরা ১২ জনকে ২ হাজার টাকা করে পুরস্কার প্রদান করা হবে। জাতীয় পর্যায়ের সেরা ১২ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১ লাখ টাকা করে প্রদান করা হবে। তাদের হাতে এ চেক তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী অবশিষ্ট ৮৪ জনকে নগদ ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার প্রদান করা হবে।

তিনি বলেন, সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এ প্রতিযোগিতা ২৫ ও ২৬ ফেব্রæয়ারি অর্থাৎ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। উপজেলা পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতা হবে ১ থেকে ৩ মার্চ, জেলা পর্যায়ে ৭ থেকে ৯ মার্চ, বিভাগীয় পর্যায়ে ১২ থেকে ১৫ মার্চ, ঢাকা মহানগর পর্যায়ে ১৬ থেকে ১৯ মার্চ ও জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হবে ২২ মার্চ।

নাহিদ বলেন, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০১৫ উপলক্ষে ১ মার্চ একটি র্যালি বের করা হবে। ঢাকা মহানগরীর ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় র্যালিটি কার্জন হল প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হবে। এতে তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণের উন্মুক্ত এ প্রতিযোগিতা ২০১৩ সাল থেকে আয়োজন হয়ে আসছে। বর্তমানে এ প্রতিযোগিতা শিক্ষা পঞ্জিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ নীতিমালা ২০১২।

হরতাল ও বোমা আতঙ্কের মাঝে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে র্যালি কতটা যৌক্তিক সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পয়লা মার্চ আসতে এখনও ২ দিন বাকি আছে। আশা করছি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের কথা বিবেচনা করে তারা আর হরতাল দিবে না। তাছাড়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই শিক্ষার্থীদের র্যালিতে আনার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে দেশবাসীরও তো ধৈর্যের একটা সীমা আছে। এভাবে তো আর চলতে দেয়া যায় না, তাহলে শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়েই এ র্যালির আয়োজন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রাইমারী স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা আগামী ৩০ থেকে ৪০ বছর দেশের নেতৃত্ব দিবেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের সহিংস তান্ডব ও বোমা আতঙ্ক এসব শিক্ষার্থীদের যোগ্য নেতৃত্বগুণ নিয়ে বেড়ে ওঠার পথকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার অনেক ভাল কাজ করছে, তারপরও সরকারকেই নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। কিন্তু যারা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে, বোমা মারছে, তাদেরকে কেন আপনারা প্রশ্ন করছেন না। নাশকতা বন্ধে তাদেরকে চাপ দিন, প্রশ্ন করুণ কেন তারা এমন করছে।

এ সময় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত সচিব এএস মাহমুদসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

আরএস/আরআইপি