ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় হকিস্টিকের প্রচলন না থাকলেও হকিস্টিক নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান টিপু মুন্সী। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী তাকে সনদপত্রও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সনদে দুটি বানান ভুল। অথচ অন্যান্যদের সনদে বানান দুটি সঠিক আছে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এরপরও সনদ বাতিলে গড়িমসি করায় এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটি।
জানা যায়, দেশ রক্ষা বিভাগ, স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক সনদ নিয়েছিলেন গণপূর্ত অধিদফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান টিপু মুন্সী। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এক বছর বর্ধিত মেয়াদে চাকরিও করছেন তিনি। কিন্তু তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।
পরে মন্ত্রী তার দফতরে শুনানি গ্রহণকালে দেখতে পান ওই প্রকৌশলীর দেশ রক্ষা বিভাগ, স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্রে উজ্জ্বল ও সংগ্রাম বানান দুটি ভুল। এছাড়া সনদপত্রে যে ক্রমিক নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে, তার ফন্টের সঙ্গে প্রকৃত সনদপত্রের কোনো মিল নেই।
সূত্র জানায়, বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গত ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) পাঠানোর পর দুই মাসে একাধিক বৈঠকেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জামুকা। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির একাধিক সদস্য সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী নিজে শুনানি গ্রহণের পর মন্ত্রণালয় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলেও জামুকার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করাটা অনৈতিক। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী নিজেই জামুকার চেয়ারম্যান হওয়ার পরও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ও জামুকার চেয়ারম্যান আ ক ম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, টিপু মুন্সীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় তা বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দ্রুত তাকে বর্ধিত মেয়াদের চাকরি থেকে অব্যাহিত না দিলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এইচএস/জেএইচ/আরআইপি