ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত: ০৬:৪১ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছেন টাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ পরোয়ানা জারি করেন। দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌছেছে।

সেন্ট্রাল জেল সুপার ফরমান আলী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ১৩ মিনিটে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানার কপি হাতে পেয়েছি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা কার্যকর করা হবে।

কবে এ রায় কার্যকর করা হতে পারে -এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি। তবে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।


বুধবার মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চার বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে বুধবার দুপুরে ৫৭৭ পৃষ্ঠার রায়ের কপি প্রকাশ করা হয়।

নিয়মানুযায়ী রিভিউ করার জন্য কামারুজ্জামান ১৫ দিন সময় পাবেন। যদি এই সময়ের মধ্যে কামারুজ্জামান রিভিউ করেন তাহলে রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রায় কার্যকর করতে পারবে সরকার।

তিনি যদি রিভিউ না করেন তবে সরকারকে রায় কার্যকর করতে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে আপিল বিভাগ বলেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া কাদের মোল্লার রিভিউয়ের আবেদনের রায়ে এ সব কথা উল্লেখ করেছেন আপিল বিভাগ।

রায়ে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ রুলসে রিভিউ দায়েরের ক্ষেত্রে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীনে রায়ের রিভিউ এর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে ১৫ দিনের সময়সীমা অনুসরণ করতে হবে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হবে।

রায়ে আদালত বলেছেন, আপিল বিভাগের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুপরোয়ানা জারির আদেশ কারাকর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছালে কারাকর্তৃপক্ষ তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদনের সুযোগ দিবেন।

একই সঙ্গে তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিতে হবে। যদি কোনো রিভিউ অথবা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন দায়ের করা হয় ওই আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না।

গত বছরের ৩ নভেম্বর তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।

কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সোহাগপুরে গণহত্যার দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ফাঁসির রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। রায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা বিভক্ত রায় দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

একই সঙ্গে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত গোলাম মোস্তফাকে হত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতিদের সর্বসম্মতিক্রমে এ দণ্ড দেয়া হয়েছে।

গত বছরের ৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসির আদেশ থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন কামারুজ্জামান। আপিলে ২৫৬৪টি মূল ডকুমেন্ট, ১২৪টি গ্রাউন্ডসহ সর্বমোট ১০৫ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৯ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বাকি দুটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তাকে খালাস দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৩ জুলাই কামারুজ্জামানকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়। একই বছর ২ আগস্ট তাকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এআরএস/বিএ/আরআইপি