ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রীর দ্বিমত

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:০২ এএম, ০১ নভেম্বর ২০১৬

বিচার বিভাগের বিভিন্ন কাজে ধীরগতির জন্য ‘দ্বৈত শাসন’ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। তার বক্তব্যটি আমি পড়েছি। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।’

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বাণীকে স্ববিরোধী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর (প্রধান বিচারপতি) এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।’

নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর হাইকোর্ট বিভাগের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রয়েছে। অন্যদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি ও শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দ্বৈত শাসনের ফলে বহু জেলায় শূন্যপদে সময়মতো বিচারক নিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকার্যে বিঘ্ন ঘটে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়।’

প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী বলেন, ৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী বিচারকদের পদায়ন, পদোন্নতি, অপসারণসহ এসব ক্ষমতা রাষ্ট্রের প্রধান বা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত থাকবে। তবে ১৯৭৮ সালে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এসব পদায়ন, পদোন্নতি সুপ্রিম কোর্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। পরে অবশ্য এই সংশোধনী বাতিল করা হয়। প্রধান বিচারপতি এসব ক্ষমতা আবারো সুপ্রিম কোর্টের অধীনে নিতে চাচ্ছেন। যেহেতু তিনি ৭২ এর সংবিধানের পুনঃপ্রবর্তন চাচ্ছেন, তাহলে সেখানে আবার এসব ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করা কীভাবে সম্ভব?

মন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার কোনো বিচারকের কাজে হস্তক্ষেপ করেছে এমন নজির নেই। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবেই তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।

বিচার বিভাগ স্বাধীন এর উদাহরণ হিসেবে ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জামিনের বিষয়টি উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে বলেই মাহমুদুর রহমান জামিন পেয়েছেন।

তবে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য যদি প্রয়োজন হয় তাহলে ১১৬ অনুচ্ছেদও সংশোধন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

প্রধান বিচারপতির হঠাৎ করে এখন একথা বলার পেছনে কোনো কারণ আছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি যে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং তার এই বক্তব্যের পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। বিচারকরা কাজ করতে গিয়ে হয়তো এসব বিষয় মনে করছেন এজন্য তিনি একথাগুলো তুলে ধরেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আইন বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক দুলাল এবং লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এমইউএইচ/এসএইচএস/আরআইপি

আরও পড়ুন