চীনে পড়তে আগ্রহ বাড়ছে বাংলাদেশিদের
বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্কের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শিক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা। আর দিন দিন বাংলাদেশ থেকে চীনে পড়তে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। চীনের সিসিটিভির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
গেল সেপ্টেম্বরে সাংহাই জিয়াওতং ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করতে সাংহাই পৌঁছেছেন ঢাকার মেয়ে শারমীন।
শারমিন বলেন, আপনি জানেন যে, চীনের ওষুধের ঐতিহ্য বেশ সমৃদ্ধ। এখানে অনেক ঐতিহ্যগত ওষুধ রয়েছে। এখানকার প্রাকৃতিক উপাদানের প্রতি আমার আগ্রহ, যা ওষুধ তৈরিতে ব্যহহৃত হয়।
আপনি জানেন যে, আমার দেশ, তথা অধিকাংশ এশিয়ার দেশ সমৃদ্ধ বা ধনী নয়। তাই এসব দেশে কৃত্রিম ওষুধ খুবই ব্যয়বহুল। যদি তারা ওষুধের প্রাকৃতিক উপাদানের দিকে জোর দেয়, তাহলে আমরা এসব প্রাকৃতিক উপাদান থেকে ওষুধ উৎপাদন করতে পারবো। এতে করে আমরা ওষুধের দামও কমিয়ে নিয়ে আসতে পারব। যা আমার দেশসহ এশিয়ার দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য ক্রয়সাধ্য হবে।
শারমিনের মতো অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সাংহাই জিয়াওতং ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগে পড়তে আগ্রহী। যেমন- বায়ো টেকনোলজি, ফার্মেসি, কম্পিউটার সাইন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যারোনেটিক্স এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট।
চীনের সাংহাই জিয়াওতং ইউনিভার্সিটিকে মনে করা হয় দেশটির অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। যাদের ১৫ জন সেখানে পিএইচডি করছেন। এদের প্রত্যেকেই চায়না সেন্ট্রাল গর্ভনমেন্ট, চায়না মিউনিসিপল গভর্নমেন্ট অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেয়ে চীনে পড়তে এসেছেন। ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে সহযোগিতার অংশ হচ্ছে এসব বৃত্তি।
সাংহাই ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক করেছেন খালেদ হোসাইন নামে এক বাংলাদেশি। তিনি বলেন, আমি আন্তাই কলেজ অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের উপর দুই বছরের মাস্টার্স পড়ছি। আমার মেজর বিষয় হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস। আমার ধারণা বাংলাদেশ থেকে আমিই প্রথম যে আন্তাই কলেজের উপর পড়াশুনা করছি। এটা আমাদের দেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
দু’দেশের মধ্যকার শিক্ষা বিষয়ক সহযোগিতার সুফলের চিত্র উঠে আসে শারমিনের কথাতেও। তিনি বলেন, চীনা সরকারের সহযোগিতা না পেলে আমার পক্ষে এখানে আসা সম্ভব হতো না। আমি এই দেশের সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা আমাদের সুযোগ দিয়েছে। শুধু আমি নই এ বছর আমার মতো আরো ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী চীনে এসেছেন। চীনা সরকারের স্কলারশিপে যাদের শিক্ষার সব খরচ সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে শারমিন বলেন- আমার পরিকল্পনা হচ্ছে দেশে ফিরে গিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করা এবং চীনে আমি যা শিখলাম তা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়া।
সাংহাই জিয়াওতং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী ডিন ফু লেই বলেন, ‘এই দুই শিক্ষার্থী তাদের দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছিল। তারা একদিন বাংলাদেশে ফিরবে এবং তাদের নিজেদের ল্যাব প্রতিষ্ঠা করবে। এটা শারমিনের একটা স্বপ্ন।
বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাদের কাছে চীনে পড়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। কীভাবে আবেদন করতে হয়। প্রতিযোগিতা কেমন হয় ইত্যাদি বিষয়েও তাদের আগ্রহ রয়েছে।
জেডএ/এনএফ/এমএস