ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সহিংসতায় পরিবহন খাতে ক্ষতি ৪ হাজার ৮০০ কোটি

প্রকাশিত: ০৮:৫৫ এএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে দৈনিক আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকার বেশি। যা জিডিপি’র ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গত ১৬ দিনে টানা অবরোধ আর হরতালে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ। এ সময় ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি হুমায়ুন রশিদ, সহসভাপতি মো. শোয়েব চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবরোধে নাশকতার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে দেশের পরিবহন খাত। অবরোধের আগুনে প্রতিদিন জ্বলছে বাস, ট্রাকসহ নানা ধরনের যানবাহন। পরিবহন শ্রমিকদের জীবন অনেকটা জিম্মি রাজনৈতিক কর্মসূচীর কাছে। ফলে পরিবহন ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন মালিক-শ্রমিকরা। এদিকে বিশেষ নিরাপত্তায় মহাসড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলের সরকারি ঘোষণা থাকলেও যাত্রীর অভাবে সে উদ্যোগও কার্যকর হচ্ছে না। ভাঙচুরের পাশাপাশি অগ্নি সংযোগের কারণে যাত্রীরা এখন আর সড়কপথে চলার সাহস পান না। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন বন্ধ থাকায় দূরপাল্লার বাস টিকেট কাউন্টারে অলস সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। কিন্তু মাস জুড়ে গাড়ির চাকা না ঘুরলেও সময় মতই মালিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ভাড়াটে লোক দিয়ে গাড়ি পুঁড়িয়ে মানুষ হত্যা করার প্রধান উদ্দেশ্য পরিবহন খাতকে ধ্বংস করা। চলমান হরতাল-অবোরধে পরিবহন খাতের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। ধ্বংসের মুখে পরিবহন খাত। মালিকরা দেউলিয়া হওয়ার পথে, শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকে নেহাত জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নেমে জীবন হারাচ্ছেন, পঙ্গু হচ্ছেন, আগুন-বোমায় সর্বস্ব হারাচ্ছেন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের একদিন পরিবহন বন্ধ থাকলে ৩’শ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। কিন্তু অন্য সব খাতের ক্ষতির হিসাব হয়, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হয়, অথচ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন খাতের প্রায় ১৫ লাখ মানুষের কথা কেউ ভাবে না।

তবে ২১ জানুয়ারি চলমান পরিস্থিতিতে পরিবহন সেক্টর নিয়ে সমস্যায় কথা স্বীকার করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হরতাল-অবরোধে গত ১৫ দিনের নাশকতায় পরিবহন সেক্টরে ‘এ পর্যন্ত ৫ শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ২ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের পরিবহন। নিষ্ঠুর রাজনীতিতে ড্রাইভার, সুপারভাইজারসহ ৭ জন নির্মমভাবে আগুনে পুড়ে প্রাণ দিয়েছে। আমরা পরিবহন সেক্টর নিয়ে সমস্যায় আছি।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য যেসব খাতসমূহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তারমধ্যে পরিবহন খাত অন্যতম। গত ১৫ দিনের অবরোধে ছয়শতাধিকের বেশি গাড়িতে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় প্রাণ দিয়েছে ড্রাইভার, হেলপারসহ সাধারণ যাত্রীরা।

তিনি বলেন, গত ১৬ দিনের হিসেবে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এ খাতে। যা জিডিপির শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ ক্ষতি অপূরণীয়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে উত্তরণে প্রধান দলগুলোকে সংলাপে বসে শন্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।

এসআই/এআরএস