দুর্নীতির কবলে ঔষধ প্রশাসন : টিআইবি
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে প্রতিটি ধাপে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। প্রতিষ্টানটির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইসেন্স প্রদান, ওষুধ নিবন্ধন, নমুনা পরীক্ষা, মান নিয়ন্ত্রণ ও রফতানি নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটিতে সীমাহীন ঘুষ-বাণিজ্য চলছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমণ্ডির মাইডাস ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে `ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে সুশাসন : চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়` শীর্ষক টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক মো. শাহনুর রহমান ও নাজমুল হুদা।
তারা বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সঙ্গে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন হয়। এছাড়া কখনও ভয়ভীতি দেখিয়ে, কখনও উপঢৌকন দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর নতুন ওষুধের লাইসেন্স দেওয়া থেকে শুরু করে ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করা পর্যন্ত ১৩ খাতে পাঁচশ` থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থ আদায় করে। এছাড়া অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন না করা, কর্মবণ্টনে অস্বচ্ছতাসহ প্রশাসনের সেবা কার্যক্রমের প্রতিটি পর্যায়ে যোগসাজশের মাধ্যমে এ অধিদফতরে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওষুধের ফয়েল, ইনসার্ট, লেবেল, মোড়ক অনুমোদন, ব্লক লিস্টের অনুমোদন, ওষুধের লিটারেচার অনুমোদন, ওষুধের দোকান তদারকি ও পরিদর্শনে কর্মকর্তারা ব্যাপক আর্থিক লেনদেন করেন। দুর্বল নীতি, আইনী কাঠামো ও আইনের কার্যকর প্রয়োগের ঘাটতির কারণে এসব দুর্নীতি হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে সদিচ্ছা এবং জনবল ও লজিস্টিকস স্বল্পতা, কর্মকর্তাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া পরীক্ষাগারের সীমাবদ্ধতা, কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতার অভাব, নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবশালীদের প্রভাবে দুর্নীতি রোধ করা যাচ্ছে না।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় টিআইবির পক্ষ থেকে মেডিকেল ডিভাইস, ফুড সাপ্লিমেন্ট, কসমেটিকস সামগ্রী, ওষুধ সংক্রান্ত কমিটিগুলোর গঠন ও কর্ম প্রক্রিয়া আইনে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি ওষুধের মূল্য নির্ধারণে গেজেট প্রকাশের সুনির্দিষ্ট সময়, ওষুধ আইনে অপরাধের জরিমানা ও কঠোর শাস্তির বিধান রাখার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্স অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।