ঈদের আনন্দ ফিকে করেছে গুলশানের সন্ত্রাসী হামলা
আচ্ছা বলতো, রাত পোহালেই তো খুশির ঈদ। ঈদের পোশাকাদি কেনাকাটা ও বাজার সদাই সবই তো করা শেষ। তবুও কেমন যেন এবার ঈদটা নিস্প্রাণ লাগছে। শেষ রমজানে উপবাস শেষে সন্ধ্যায় ইফতারির টেবিলে বসে আনমনে পরিবারের সদস্যদের কাছে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান। তার সহধর্মিণী তাহনিমা রহমান স্বামীর কথার সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঈদের আনন্দকে ফিকে করে দিয়েছে। এসময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও কথা সঠিক বলে সায় দেন।
শুধু মাহবুবুর রহমানই নন, জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা মনের অজান্তেই অসংখ্য পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কিত করেছে। জাতীয় ঈদগাহ থেকে শুরু করে সকল বিনোদন কেন্দ্রে যেকোনো জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে সরকার সর্বাত্মক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিলেও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ।
ইতোমধ্যে জঙ্গিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা ভিডিওবার্তা প্রকাশ করে ফের বড় ধরণের হামলার হুমকি দিচ্ছে। আজ সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে ফেসবুকে যে কোন ধরনের ভিডিও ছবি আপলোড, জঙ্গি সংক্রান্ত বিষয়ে লাইক ও কমেন্ট করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় দুটি উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর। অন্যান্য বছর ঈদের দিন মানুষ মনের আনন্দে এখানে সেখানে ঘুরে বেরিয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে ভীতির সৃষ্টি করেছে।
আগে জঙ্গি হামলার ঘটনায় মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত গরিব তরুণ শিক্ষার্থীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেও এবার ইংলিশ মিডিয়ামে দেশ বিদেশের ধনী ও উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের ছেলেমেয়েদের জড়িত হওয়ার বিষয়টি মানুষের মনে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদে হাজার হাজার টাকার কেনাকাটা করলেও ঈদের সেই আনন্দটা কেন জানি ফিকে মনে হচ্ছে। তারা বলেন, জঙ্গি হামলার ঘটনায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থা থেকে কবে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে ও কিভাবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে সকলের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এমইউ/এসকেডি