জাতির ক্রান্তিকালে পুলিশ কখনও পিছু হটেনি
জাতির ক্রান্তি ও দুর্যোগকালীন সময়ে পুলিশ কখনও পিছনা হয়নি। ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে অতীতের যে কোন দুর্যোগে পুলিশ প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তুলেছে। গত শুক্রবার গুলশানে দুই পুলিশ কর্মকর্তা জীবন উৎসর্গ করে দুর্বৃত্তদের ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
নিজ থানা বা এলাকার ঘটনা না হলেও পেশাদারিত্ব থেকে ছুটে গিয়েছিলেন ওসি সালাউদ্দিন। সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম মাত্র সাড়ে চার বছরের চাকরিতে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বেঁচে থাকলে আগামী ৩০ বছর চাকরি করে দেশের স্বার্থে অনেক কিছু করতে পারতেন। তাদের হারিয়ে দেশের ক্ষতি হয়ে গেল।
সোমবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন আইজিপি। শুক্রবার জঙ্গি হামলায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়।
শুরুতে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বক্তৃতা দিলেও এক পর্যায়ে সেদিনের ঘটনা বর্ণনা ও চোখের সামনে ওসি সালাউদ্দিনকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখার কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। নিজেকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
আইজিপি বলেন, সেদিন জাতীয় স্বার্থে দেশের সব বাহিনী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। স্টান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) না থাকলেও সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, ডিবি, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ সব বাহিনী সেদিন গুলশানে ছুটে এসেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
তিনি জানান, ওসি সালাউদ্দিনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গুলশান এলাকার সব রাস্তাঘাট ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ থাকলেও বারিধারা এলাকার সব ব্যারিকেড খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চোখের সামনেই তার মৃত্যু দেখতে হলো।
তিনি বলেন, ঘটনা ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই প্রাথমিকভাবে জীবন বাজি রেখে প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের পালানোর সুযোগ বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, অনেক বড় বড় ঘটনা পুলিশের দক্ষ কর্মকর্তারা সামাল দিলেও এ ধরনের জিম্মি আটকের ঘটনা নতুন। পুলিশকে আরো বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এমইউ/এনএফ/এমএস