ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

স্যামসন এইচ চৌধুরীর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৫

সোমবার ছিল দেশের খ্যাতিমান শিল্পোদ্যোক্তা ও স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের এই দিনে তিনি সিঙ্গাপুরের র‌্যাফে-লস হাসপাতালে তিনি পরলোক গমন করেন।

সততা, নিষ্ঠা, শ্রম, মেধা ও শৃংখলা একজন মানুষকে কত উপরে নিয়ে যেতে পারেন তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত স্যামসন এইচ চৌধুরী। যিনি প্রচন্ড আস্থা ও মনোবলকে পূঁজি করে শুন্য থেকে শিখরে পৌঁছেছিলেন।

১৯৫৮ সালে স্কয়ার ফার্মা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এরপর তিনি একে একে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। দেশবরেণ্য এই শিল্পপতির মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে পাবনার এষ্ট্রাস খামার বাড়ীতে প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাবনা প্রেসক্লাব স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে।

তার জন্ম ১৯২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব পাকিস্তানের ফরিদপুর জেলায়। পিতার নাম ইয়াকুব হোসেন। তিনি ১৯৩০-১৯৪০ সাল পর্যন্ত কলকাতার বিষ্ণুপুর হাই স্কুলে পড়ালেখা করেন। সেখান থেকেই সিনিয়র ক্যামব্রিজ ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন।

তিনি ১৯৫৮ সালে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল স্থাপন করেন, প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয় ১৯৯১ সালে। বর্তমানে ৪০,০০০-এরও বেশি কর্মচারী নিয়ে স্কয়ার বাংলাদেশের সেরা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। স্যামসন এইচ চৌধুরী ছিলেন স্কয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস বাদেও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন।

বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০০৭ সাল পর্যন্ত চৌধুরীকে বাংলাদেশের অন্যতম সর্বাধিক করদাতা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। বহু বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার তাকে কমার্শিয়াল ইম্পর্ট্যান্ট পার্সন(সিআইপি) আর ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট পার্সন (ভিআইপি) এর মর্যাদা দিয়েছে। তিনি মেট্রোপলিটান চেম্বার অফ কমার্স, ঢাকা-এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স বাংলাদেশ এর প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অফ বাংলাদেশের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আর ২০০০ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিজ-এর প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্ট।

তিনি বিজনেস এক্সিকিউটিভ অফ দ্যা ইয়ার ১৯৯৮ (পুরস্কারদাতা আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ), বিজনেসম্যান অফ দ্যা ইয়ার ২০০০ (পুরস্কারদাতা দ্যা ডেইলি স্টার ও ডিএইচএল ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস লিমিটেড)। স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯৯৪-৯৫ সালে রোটারি ক্লাব অব ঢাকা বুড়িগঙ্গার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর ফাউন্ডার ট্রাস্টি ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন।

স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯৮৫-১৯৯০ সাল পর্যন্ত ব্যাপ্টিস্ট ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্সের (ইউ.এস.এ) ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল খ্রিস্টান ফেলোশিপ-এর প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট ফেলোশিপ মেডিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল খ্রিস্টান চেম্বার অফ কমার্স-এর সদস্য ছিলেন।

তিনি NCFB এবং Koinonia নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটির আজীবন সদস্য। তিনি ভ্রমণ করতে ভালোবাসতেন। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশে ভ্রমণ করেছেন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি এই কর্মযোগীর মহাপ্রয়াণ ঘটে।