হজ মেডিকেল টিমের প্রাপ্য দুই কোটি টাকা ছাড় দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আজমল হোসেন (ছদ্মনাম) গত বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডেপুটেশনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে সৌদি আরব যান। এক মাসেরও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করে প্রতিদিন অসুস্থ বাংলাদেশি হাজিদের চিকিৎসা দেন তিনি।
পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাওয়ার সময় তাদের খাবার, পকেট খরচ ও ভ্রমণসহ অন্যান্য ভাতাবাবদ সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক ২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা দেয়া হয় এবং ফিরে আসার পর বাকি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। বছর পেরিয়ে গেলেও সে টাকা তাদের ভাগ্যে জোটেনি।
আজমল হোসেন জানান, তিনি প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় বাকি টাকা দিতে গড়িমসি করছে।
আজ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না, মেডিকেল টিমের চিকিৎসক ও নার্সদের কী নিদারুণ পরিশ্রম করতে হয়। বাংলাদেশি হাজিদের অধিকাংশ বয়সের ভারে ন্যুব্জ।
নানা অসুখ-বিসুখ যেমন- ডায়াবেটিস, কিডনি, ডায়রিয়া, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগাক্রান্তরা হজের নিয়মকানুন পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মেডিকেল টিমের সদস্যরাই সেবা দিয়ে সুস্থ করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য প্রাপ্য টাকাটা দেয়া হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দুই শতাধিক হজ মেডিকেল টিমের সদস্য টাকা পাচ্ছেন না। মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, নার্স, সেনাবাহিনী পরিচালিত কমবাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালের (সিএমএইচ) চিকিৎসক ও নার্সও রয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দুই শতাধিক মেডিকেল টিমের ভাতাবাবদ ২ কোটি টাকা ছাড় পেয়েছে। সমুদয় টাকা এখন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অ্যাকাউন্টে রয়েছে। চলতি অর্থবছরের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে টাকা খরচ না করলে টাকা ফেরত যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা দুই কোটি টাকা তাদের একাউন্টে রয়েছে উল্লেখ করে জানান, তারাও চাইছেন একাউন্ট পে-চেকের মাধ্যমে যার যা পাওনা তা বুঝিয়ে দিতে এবং এ লক্ষ্যে তালিকাসহ পাওনা পরিশোধ সংক্রান্ত ফাইল ধর্মসচিবের কাছে উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পাওনা পরিশোধ নিয়ম মাফিক হচ্ছে না- এ অজুহাতে সচিব টাকা ছাড় দিচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আবদুল জলিলের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। যুগ্ম-সচিব (হজ) মীর নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন বলে জানান।
এমইউ/এনএফ/পিআর