নার্স নিয়োগ পরীক্ষায় অনুপস্থিত সাড়ে ৬ হাজার
‘বেয়াদব মেয়ে’ বলতেই তরুণীকে পেছন থেকে কেউ একজন টেনে ধরল। সঙ্গে সঙ্গে আরও পাঁচ সাতজন তরুণী তাকে টেনে হিঁচড়ে ভেতরে নিয়ে যায়। এই অল্প সময়েই মেয়েটিকে উত্তম মধ্যম দেয়ার কাজও শেষ।
এ দৃশ্য আজ (শুক্রবার) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের ছোট পকেট গেটের সামনের।
শুক্রবার ছুটির দিন হলেও হাসপাতালের বহির্বিভাগে সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রবেশ গেটে বেকার নার্সরা পাহারা বসায়। তাদের সকলের চোখেমুখে ক্রোধের আগুন। দেখে নার্স বা বহিরাগত মনে হলেই তারা বাইরে যেতে বাধা দিচ্ছিল। রীতিমতো জেরা ও সঙ্গে থাকা সব কিছু চেক করে সন্তুষ্ট হলেই তবেই বাইরে যাওয়ার অনুমতি প্রদান।
মূলত বেকার নার্সরা আজ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এর পরীক্ষায় সহকর্মীদের যেতে না দেয়ার জন্যই প্রহরা বসায়। তাদের বাধার কারণে সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি নার্স পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারেনি।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সামনেই বহু নার্সকে আটকে দেয়া হয়। আলাপকালে ক্ষুব্ধ নার্সরা বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এবার মরবো না হয় আন্দোলনে বিজয়ী হবো।
তারা আরো বলেন, আজকে (শুক্রবার) যারা নার্স ভাইবোনদের রক্তের ধারার উপর দিয়ে হেটে গিয়ে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন, তারা সারা জীবন বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবেন। এই পরীক্ষা বাতিলের জন্যই শত শত নার্স আহত হয়েছে। এক নার্স মা হতে পারেননি, অকালেই গর্ভের সন্তান আধারে হারিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারুক হোসেইন জানান, তারা কখনওই এ প্রহসনের পরীক্ষা মেনে নেবেন না। কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচীর মাধ্যমে ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটি ভিত্তিতে তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ঘোষিত সাড়ে তিন সহশ্রাধিক সিনিয়র ষ্টাফ নার্সের বিপরীতে ১৮হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। আজ সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিত চৌধুরী জানান, পরীক্ষায় ১১হাজার ৪শ’ ২৬জন অংশগ্রহন করে। অনুপস্থিত ছিল ৬হাজার ৬শ’৩৬জন।
এমএমজেড/এমএস