সিলেট ও সুনামগঞ্জে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে (ওয়ান-ইলেভেনের সময়) আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করায় ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জের আরো দুটি মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার দুুপুরে সিলেটে আমল গ্রহণকারী বিচারিক (জৈন্তপুর) হাকিম কুদরত-ই-খোদার আদালতে সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. আফসার আজিজ ১৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলাটি দায়ের করেছেন।
এর আগে গত রোববার সিলেট মহাগর ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল বাসিত রুম্মান এবং সাবেক সভাপতি রাহাত তরফদার পৃথকভাবে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে এক’শ কোটি করে ২০০ কোটি টাকার মানহানির দুটি মামলা দায়ের করেন।
আফসার আজিজের আইনজীবী, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, আদালত মামলা আমলে নিয়ে অধীনস্থ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার শুনানিকালে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি একেএম অ্যাডভোকেট শমিউল আলম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহসিন, অ্যাডভোকেট বেলাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জুবায়ের বখত জুবের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী বিচারিক হাকিম আদালতে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন যুক্তরাজ্য-প্রবাসী আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ আবুল কাশেম।
তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
সৈয়দ আবুল কাশেমের আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুল আলম ইসলাম জানান, বেলা ১১ টায় তিনি মামলাটি সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী বিচারিক হাকিম আদালতের (সদর) বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল আমিনের কাছে দাখিল করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পরবর্তী সময়ে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার আরজিতে সৈয়দ আবুল কাশেম উল্লেখ করেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা তথ্য যাচাই-বাছাই না করে মাহফুজ আনাম ইচ্ছাকৃতভাবে ডেইলি স্টার পত্রিকায় মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করেছেন।
এতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং মানহানি ঘটেছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে মামলার বাদী ব্যথিত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক-এগারোর সময় সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের বিচ্যুতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মাহফুজ আনাম তার পত্রিকায়ও এমন ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছিল বলে স্বীকার করেন।
এর পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে ডেইলি স্টার এর সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলে বিচার চান। এক দিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে কয়েকজন সাংসদ ডেইলি স্টার বন্ধ করা এবং মাহফুজ আনামের পদত্যাগ ও বিচার দাবি করেন। এর পরদিন থেকে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।
ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস