‘করোনাকালে গণমাধ্যমকর্মীদের ঝুঁকিভাতা দেয়া উচিত’
করোনাকালে গণমাধ্যমকর্মীরা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা। তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করে জনগণকে সচেতন করার কাজটি ভালোভাবেই করে আসছেন। ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক মারাও গেছেন। অথচ তাদের বিষয়টি তেমনভাবে কেউ ভাবছে না। তাই বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল এবং ঝুঁকিভাতাসহ প্রণোদনা দেয়া উচিত।
রোববার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গণমাধ্যম ও বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি, এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, প্রফেসর ডা. মো. এখলাসুর রহমান ও এটিএন বাংলার উপদেষ্টা তাশিক আহমেদ প্রমুখ।
ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, আমি অনুরোধ করবো, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমে কর্মরতদের যেন টিকার আওতায়ও আনা হয়। বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ, চিকিৎসার অব্যবস্থাপনা যদি থাকে সেগুলোকে তুলে ধরার পাশাপাশি চিকিৎসকদের ভালো ভূমিকাগুলোও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরুন। তা না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাস্কের দাম, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা রোধে ব্যবহৃত পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বেড পাওয়া যাচ্ছে না। যারা একবার করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা বুঝতে পারছেন করোনার চিকিৎসা কত ব্যয়বহুল। কী কারণে করোনার চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আমরাই বেসরকারিভাবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল চালু করি। যদিও শুরুতে চিকিৎসা প্রদানে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছিল। তবে এখন আমরা অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও নির্দেশনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। তিনি চিকিৎসা প্রদানে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগের কথা গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেন।
ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, করোনায় মৃত্যুহার কমাতে বাংলাদেশের হাসপাতাল তথা চিকিৎসকের ভূমিকা অপরিসীম। তারা জীবন বাজি রেখে চিকিৎসাকাজে নিয়োজিত ছিলেন বলেই দেশে করোনায় সেভাবে প্রাণহানি ঘটেনি। বড় আশার কথা, এখন তারা এই চিকিৎসাকে অনেকটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা রোগী ও রোগীর স্বজনদের প্রতি আরেকটু যত্নবান হবেন। তাদের রোগ এবং চিকিৎসার বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তারা আশ্বস্ত হন। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো যায় ও জটিলতার অবসান হয়।
এমইউ/এমএসএইচ