‘সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড আননেসেসারি’
সাংবাদিকদের কোনো ধরনের ওয়েজ বোর্ডের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি এ ওয়েজ বোর্ডকে আননেসেসারি (অপ্রয়োজনীয়) বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ, নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি ও দৈনিক সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ এবং দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের প্রয়োজন নেই, তাদের বেতন নির্ধারণ বাজারের উপর ছেড়ে দেয়া উচিৎ। তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে বুঝেছি সরকারি চাকরিজীবীদের তুলনায় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন বেশি। সুতরাং, ওয়েজ বোর্ড রাখাটা আননেসেসারি।
তিনি বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ড করার জন্য কী কী করতে হবে। আমদের একটা ফিলিং হলো, এখন আমরা সিদ্ধান্ত নেবো শর্টলি যে সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড ইজ আননেসেসারি। টোটালি আননেসেসারি। ঢাকার সাংবাদিকদের সেলারি স্কেল ইজ বেটার দ্যান গভর্মেন্ট সেলারি স্কেল। তাহলে কেনো আমরা যাবো।’
সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন, প্রোভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে কিন্তু সাংবাদিকদের তো এমন কোনো সুযোগ নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদেরও প্রোভিডেন্ট ফান্ড আছে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাসটার্স ডিগ্রি পাস করে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, মাস্টার্স পাস করা পিয়ন আমাদেরও আছে। ১৬ হাজার টাকা বেতন পায়। আমি জানি আপনাদের ৫টি গ্রেড আছে। সর্বশেষ গ্রেড ২০ হাজারের কোটায় রয়েছে। টেলিভিশনে তো ওয়েজ বোর্ড নেই এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নো নো টেলিভিশন নয় ফর অল এভরিবডি।’
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আপনার একজন বা দুইজন দায়িত্ব নেন, আমাকে আপনাদের ৫টি গ্রেডের তথ্য দেন। সব পত্রিকায়তো ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন নেই এ বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় ১৫-২০টি খবরের কাগজ ছাড়া ৫০০টি পত্রিকা রয়েছে এগুলো অল আর ভোগাস। ওদের জন্য আমরা বেতন স্কেল ঠিক করবো! আমি ১৫ বা ২০ পত্রিকার জন্য বেতন স্কেল ঠিক করতে পারি। যেগুলোতে মানুষজন কাজ করে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে আমার উপলব্ধি হচ্ছে যে সাংবাদিকদের জন্য কোনো ওয়েজ বোর্ডের প্রয়োজন নেই।’ টেলিভিশনগুলোর কী হবে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শেম, শেম, শেম। কয়েকটা টেলিভিশন মরে যাবে। ইজ ইট ডিজারেবল ফর কান্ট্রি? দুনিয়ার কোন খানে এত টেলিভিশন চ্যানেল আছে?’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কত বার বলেছি, এতগুলো ব্যাংক আছে, টেলিভিশন আছে, এগুলো থাকবে না। অটোমেটিক্যালি এগুলো মরে যাবে যাবে, যখন আইনটা হবে।’
এসময় সাংবাদিকরা জানতে চান, তাহলে সরকার এগুলোর অনুমোদন দেয় কেন? জবাবে উপস্থিত তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার জন্য এখনও কোনো আইন নেই। ওয়েজ বোর্ড হচ্ছে খবরের জন্য, সেজন্য অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সংবাদপত্রের মালিকদের সঙ্গে বসেছিলাম। কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এরপর অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে অত্যন্ত দুঃখজনক তথ্য পাচ্ছি। ৫শ’ কাগজ আপনারা বের করেন-এগুলো ফলস, এখানে সব চুরি করে।’ তাহলে ঐসব পত্রিকা বন্ধ করা হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যাপার।’
কীভাবে বেতন নির্ধারণ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কতটা পেশা আছে- কার জন্য ওয়েজ বোর্ড করলাম। একমাত্র সরকারি চাকরি ছাড়া কোথাও বেতন নির্ধারণ হয় না। বাকিরা মাকের্ট ডিটারমেন্ট করে। প্রাইভেট সেক্টরের উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’
এরপর অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করলে তথ্যমন্ত্রী বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এমইউএইচ/এসএইচএস/এমএস