কিডনি রোগে ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু
বাংলাদেশে দুই কোটির অধিক মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় অকাল মৃত্যুবরণ করছে পাঁচজন।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ফ্রি কিডনি পরীক্ষা ও কিডনি সচেতনতামূলক সেমিনারে এমন চিত্র ওঠে।
সেমিনারে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট ও কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সাধারণত ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগীরা বুঝতেই পারে না যে, তিনি ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত।
অধ্যাপক এম এ সামাদ বলেন, কিডনি রোগের চিকিৎসা এতোই ব্যয়বহুল যে, এদেশের শতকরা ১০ ভাগ লোকেরও সাধ্য নেই এই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার। সচেতন হলে শতকরা ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে ভয়াবহ কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, দেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬৩ ভাগ লোকের মৃত্যু হয়, যা আগামী ১০ বছরে এ হার ৭০ ভাগ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ, প্রতিবছর দুই ভাগ হারে এটা বৃদ্ধি পায়।
বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক বলেন, সচেতন হলেই এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বের ১০ জনের একজন কিডনি রোগী।
কিডনি রোগ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিকভাবে ১০টি স্বর্ণালী সোপান কঠিনভাবে অবলম্বনের তাগিদ তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এগুলো হলো- কায়িক পরিশ্রম ও খেলাধুলা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান থেকে বিরত থাকা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ যাতে প্রতিদিন শাকসবজি ও ফল থাকবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ফাস্টফুড পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, পরিচ্ছন্ন থাকা ও খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যাথানাশক ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন না করা, নিয়মিত কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।
ক্যাম্পস`র বিবিধ সেবা কার্যক্রমের বিশেষ অংশ হিসেবে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ফ্রি কিডনি স্ক্রিনিং ও কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন করে।
ক্র্যাব সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী, ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক সরোওয়ার আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী ফ্রি স্ক্রিনিং কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ২০০ জন পেশাদার সাংবাদিকের কিডনি স্ক্রিনিং করা হয়।
এফএইচএস/জেএইচ