মানিক পালের কবিতা: বিরহের উপন্যাস
কোনো এক আষাঢ়ের বিকেলে দেখা হয়েছিল
তার সাথে খুব কাছাকাছি, আমার প্রথম যৌবনে।
একই মহল্লায় দুজনের বসত, অথচ পরিচয় হয়নি কখনো।
সেই আষাঢ়ের বিকেলেই প্রথম পরিচয়, অতঃপর প্রায়ই ইচ্ছে করে
পথ ভুল করার ছলে একটু দেখার সে কী ব্যাকুলতা।
কিংবা দেবতার ফুল তোলার ছলে আমাদের বাড়ির পুকুরপাড়ে
করবী, দোলনচাঁপা ও বকুলতলায় তার আনাগোনা।
কাকভেজা দেহ, অপলক মাতাল চাহনি
উচ্ছসিত দুষ্টু হাসির প্রচ্ছদ সমেত
সে যেন একখানা রোমান্টিক উপন্যাস কিংবা কাব্যগ্রন্থ।
অদম্য কৌতূহলেই পাতা ওল্টালাম
আর পড়তে থাকলাম দিনের পর দিন।
একেকটা পাতা পড়তে পড়তে রাত পেরিয়ে
কখন যে ভোরের সূর্যোদয় হয়ে যেত
তা বুঝতেই পারতাম না।
প্রতিটি পাতায় যেন একেকটি কবিতার ডিম্বাণু ছড়ানো
মনের আজান্তেই যেন শুক্রাণু নিঃসরণ হয়ে
একেকটা কবিতার জন্ম দিয়ে ফেলতাম।
কখন যেন হয়ে গেলাম এক স্বঘোষিত প্রেমের কবি।
বইয়ের পাতায় পাতায়, পরতে পরতে যেন
নিজেকে হারিয়ে ফেললাম।
বছর কয়েক পরে কোনো এক অধ্যায়ে এসে
জানতে পারলাম, অন্য কেউ বইটির স্বত্বাধিকারী।
তাই বাকি অধ্যায় অপঠিতই রয়ে গেল।
প্রচ্ছদের দিকে তাকিয়ে দেখি সেই মুখটা বিবর্ণ-ফ্যাকাসে।
ক্রমশ ভাবনাগুলো এলোমেলো হতে হতে
কবিতার ছন্দরা খেই হারাতে থাকলো,
অতঃপর আচমকাই এক বিরহের উপন্যাসের জন্ম হলো।
এসইউ/জিকেএস