অনিন্দ্য নূরের কবিতা
এসো প্রাণের প্রশান্তি এবং অন্যান্য
এসো প্রাণের প্রশান্তি
আমাদের অন্ধ হৃদয়ে সূর্যাস্ত যায় নীরবে
দেউলিয়া জ্যোৎস্না নিখোঁজ পার্থিব বিরহে।
প্রোথিত শেকড় পৃথিবীর পথ ভুলে যায়
কত শত অভিশপ্ত ভেজা কাজলের মায়ায়।
উচ্ছ্বাস প্রাণে প্রিয়ার করুণ নগ্ন চুম্বন
আরাধ্য অনুভূতির শবচ্ছেদে তীব্র রক্তক্ষরণ।
‘এসো প্রশান্তি—আবিষ্ট আলিঙ্গনে স্বর্গসিঁড়ি মাড়িয়ে
জরা-ব্যাধি ধরায়—সহস্র কোটি প্রাণের প্রশান্তিতে’
****
হৃদয় দহন
প্রেতপুরী সূর্য—আপসে কত হৃদয় পোড়ালে?
হাড়ক্লিষ্ট শরীরে তাম্রবর্ণ হৃৎপিণ্ড ছাড়া কিছুই নেই
পাঁজরের উদ্যানে সহস্র কোটি কোষের অগ্নিবানে
আস্ত মানব মানচিত্র পুড়ে ছাই।
আকাশের নীল সায়ানাইট চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে
পার্থিব অভাবী আর ক্ষুধার্তদের খাবারের থালায়।
কী বিচিত্র পৌরাণিক জীবনবোধ—তবুও
পরিশ্রান্ত ধোঁয়াশা চোখের অন্ধ বর্ণে বর্ণে
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মরীচিকার দেওয়াল।
শহরের সবাই ক্লান্ত ভাতঘুমে ঢলে আছে
অনন্ত ধ্রুব মৃত্যুর মতো প্রাণবিলাসী।
বাহুডোরে রেশমের মতো স্নিগ্ধ প্রেয়সীর আশ্রয়
যেখানে এক পাতালপুরীর মায়াবিনাশী গরল আস্তরণ।
অনিঃশেষ প্রাণে প্রাণে জ্যোৎস্নার ডানা মেলে
বীভৎস পোড়া চোখ জাগে অলৌকিক স্বপ্নের আলোয়।
****
প্রাণের উচ্ছ্বাস
তোমার চোখে চোখ পড়লেই চাঁদটা ঝরে যায়
এত প্রাণের উচ্ছ্বাস চাঁদের বুকে ধরে রাখা দায়।
****
স্বপ্ন মেঘের আল্পনা
তোমার ইচ্ছেফড়িং আকাশ খুঁজে পেয়েছে—
গোলাপি মেঘের ডানায় সৌভিক আল্পনা আঁকো।
বিম্বিসার মায়ায় কত রাজ্যের পরাজয় নিয়ে
উড়নচণ্ডী লাটাইহীন ঘুড়ির মতো দুলে ওঠো হৃদয়ে।
যাযাবর পাখিদের মতো বুকে প্রেম নিয়ে ওড়ো
সন্ধ্যা নীড়ের সন্ধানে মায়া ভরা অভিসারে
ডানায় ডানায় মৃত রোদের মৃদু জলছাপ নিয়ে
অনন্ত অপেক্ষা শুধু একটা নক্ষত্রে রাতের আশ্রয়ের।
অস্তগামী সূর্যের মতো কত রং হারালে
রংধনুর সমস্ত রং কালো মেঘে বিলীন হয়।
শুধু বলাকা দিনে চামেলি ফুটবে বলে
বুকে গড়ে তুলেছি আরাধ্য নৈসর্গিক ভ্যালি।
তোমার স্বচ্ছ চোখের কোণে সাগরের নীল মুছে যায়
বেওয়ারিশ প্রেমিকদের হৃদয় এখন চূড়ান্ত ভাবে খুন।
এসইউ/জিকেএস