দুলাল সরকারের দুটি ফাগুনের কবিতা
তবে কি আজ ফাগুন
তবে কি আজ ফাগুন? গুনগুনিয়ে বাজছে কোথাও আগুন
মনের বনে কথার পাখি, অনেক আবেগ
হৃদয় ফুঁড়ে কথার উঁকি, দরজা খুলে হাজার কথা ফুটুক
তুমি-তুমি, বাকুম-বাকুম এমন ধ্বনি
জীবন ঘিরে লতিয়ে কথা ফুলের মতো ফুটুক;
আজ বসন্ত সবাই তবে জানুক... এই বারতা
সবার ভেতর আসুক... তানপুরাটা বাজুক,
ডাকুক পাখি ডাকুক... পথে পথে পলাশ ফুটে
তোমার মনের রঙিন বোতাম খুলুক, আলোর প্রদীপ
ঝলমলিয়ে উঠুক... রুদ্ধ দিনের বন্ধ দুয়ার খুলুক;
উড়ে উড়ে প্রজাপতি ফুলে ফুলে পাগল-পাগল নাচুক,
হাওয়ার গন্ধে নাচুক... রক্তে রক্তে বাজুক নূপুর বাজুক
মৃদু—মৃদু হাওয়ায়—হাওয়ায়
ঘর ছাড়া এক রাখাল বাতাস কেউ তোমাকে বলুক—
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
এমন একটি রাত্রি তোমায় ডাকুক;
ঘুম আসে না এমন কারো কথার স্মৃতি
সারারাত্রি জাগিয়ে তোমায় রাখুক।
****
তুমি মিছিলের ডাক
আজ কিছুতেই তুমি হলুদ শাড়িটা পরে বাইরে এসো না
বাইরে অনেক প্রজাপতি—মিছিলের ডাক
তোমার কাপড়ে এসে বসবেই
তুমি ও রকম করে বাইরে এসো না,
বাইরে অনেক পাখি, শিশিরের দাগ
কিছুতে লুকাতে পারো এমন শাড়িতে
তুমি তোমাকে ঢেকো না;
তোমার হৃদয়ে যদি মেঘ করে আসে
ময়ূর নাচবে তাতে বনের নির্জনে
তুমি গোপনে থেক না—
যদি ভালোবাস সূর্যাস্তের লাভা স্লোগান পাগল পাতা
পাখিও জানবে এক ঘুঘু কোথাও ডাকবে বসে ডালের ওপর;
নদীকে লুকাতে চাও? সে তোমাকে জানে
তুমি তার চেয়ে কত স্রোতস্বিনী বেশি—
বাইরে এসো না—বাইরে বাতাস
জীবনের দাবি মুখরিত জন—প্রতিবাদ,
তুমি মিছিলের ডাক—মিছিল তোমাকে ডাকছে,
তুমি বসন্ত বাতাস—বনের পারুল
চির চেনা তুমি গুপ্ত আগুন—
মিছিলের শিখা—চুলে ও বকুল
তুমি প্রজাপতি হলুদ বোঁটায়—তুমিও মিছিল
মিছিল তোমাকে ডাকছে;
আজ কিছুতে পরো না হলুদ শাড়িটা
বাইরে মিছিল—মিছিলে মিছিল, একুশের স্বর
মিছিল তোমাকে ডাকছে—রাত্রির নীল
রাত্রি তোমাকে খুলবে—খুলে খুলে দ্যাখে
নিঃসীম আকাশ, তারায় তারায় উপচে।
এসইউ/জিকেএস