সানাউল্লাহ সাগরের তিনটি কবিতা
রাত
এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা আমার পুরানো অভ্যাস
রেললাইনের ধারাবাহিকতা ভুলে
শূন্যে ছুঁড়ে দেওয়া কথাগুলো ফিরিয়ে আনতে
আকাশমুখি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
রাত নেমে আসে
ব্যয় হওয়া কথারা আর নেমে আসে না।
প্রতিরাতে মৃত্যু আসে
হাসাহাসি শেষে আমরা পরষ্পর আলিঙ্গন করি
চুম্বনের স্বাদ ঠোঁটে নিয়ে আরেকটি রাতের জন্য অপেক্ষা করি...
লোডশেডিং
কারেন্ট চলে গেলো। চৈত্রের শেষ সময় বলে আকাশ সময়-অসময় বমি করে। আর পরোক্ষ বয়ানে রক্তের তীব্রতা বাড়ে। ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে সাবেক প্রেমিকা- আজ রাত এগারোটা বাজার আগেই তার নাচের বারোটা বেজে গেছে।
আমি নিঃশব্দ দেয়াল! রঙমাখা মিহি আলোয় একবার তার মুখ আর একবার মোমের চাতুরতা দেখছি। কিভাবে নাচিয়ে যাচ্ছে বরকতের মায়াবী মুখোশ। প্রকৃতি বলে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেছে যে প্রতিকৃতি- সেও হয়তো মোমের ইতিহাস জানে। আগুনের বংশেই তার জন্ম; আর ছায়া ভেবে যাকে ভুল খুঁজছি সে মোমের পিতামহ!
দৃশ্যায়ন
রাত এলে আমাদের দূরত্ব বাড়ে
আগুনের উৎপাত শুকনো দেয়াল ডিঙিয়ে
অপরপৃষ্ঠার মাঠে চলে যায়-
প্রসস্থ গলিতে শৈশবের হাততালিরা ঘুরে ঘুরে
অবশেষে যন্ত্রণার চোরাগলিতে ঢুকে পড়ে।
রাত হাঁটা শুরু করলে
তোমার চোখে নাচের আবহ তৈরি হয়
ঝিমিয়ে পড়া কথারা তরলফ্রেমের অজুহাতে
লাস্টবেঞ্চিতে বসে পড়ে!
অন্ধকারের সংগীত শুরু হলে
আমাদের হাতের আড়ালে
রাত ঘেমে ওঠে-
আর আমরা মুখোশের শেকড় থেকে টুকরো কিছু শব্দহীন কথাকে গোলাপ নামে সাজিয়ে রাখি
রাত এলে- আমার হাতের হাঁটাহাঁটি ফুপিয়ে ওঠে;
তোমার মুখে বিস্ময় খেলা করে...
এসইউ/এমএস