কবি আবুবকর সিদ্দিক মারা গেছেন
কবি, ঔপন্যাসিক, ছড়াকার, গল্পকার ও সমালোচক আবুবকর সিদ্দিক (৮৭) মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ২৮ ডিসেম্বর ভোর পৌনে ৬টায় খুলনার সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে কবি ৫ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কবির পারিবারিক বন্ধু মামুন মুস্তাফা জাগো নিউজকে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন। ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৮ ডিসেম্বর বাদ জোহর খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে কবির জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
আবুবকর সিদ্দিক ১৯৩৪ সালে ১৯ আগস্ট রোববার বাগেরহাট জেলার গোটাপাড়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতৃনিবাস একই জেলার বৈটপুর গ্রামে। পিতা মতিয়র রহমান পাটোয়ারী ছিলেন একজন সরকারি চাকরিজীবী।
বাবার চাকরিসূত্রে ১৯৩৫ সাল থেকে তিনি হুগলি শহরে এবং ১৯৪৩ সাল থেকে বর্ধমানে বসবাস করেন। ১৯৪৬ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে থাকাকালীন তাঁর প্রথম কবিতা আবদুস সাত্তার সম্পাদিত বর্ধমানের কথা পত্রিকায় ছাপা হয়।
তিনি বাগেরহাট মাধ্যমিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক, ১৯৫৪ সালে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই কলেজ থেকে ১৯৫৬ সালে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৫৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাগত জীবনে তিনি পর্যায়ক্রমে চাখার ফজলুল হক কলেজ, দৌলতপুর বিএল কলেজ, কুষ্টিয়া কলেজ, বাগেরহাট পিসি কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৯৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেন। এরপর কুইন্স ইউনিভার্সিটি ও ঢাকার নটর ডেম কলেজে অধ্যাপনা করেন।
তাঁর প্রকাশিত ‘ধবল দুধের স্বরগ্রাম’ (১৯৬৯), ‘বিনিদ্র কালের ভেলা’ (১৯৭৬), ‘হে লোকসভ্যতা’ (১৯৮৪), ‘মানুষ তোমার বিক্ষত দিন’সহ (১৯৮৬) ১৮টি কাব্যগ্রন্থ আছে। আছে ‘হট্টমালা’ (২০০১) নামে একটি ছড়াগ্রন্থ। তাঁর গল্পগ্রন্থের সংখ্যা ১০টি। তিনি ‘জলরাক্ষস’ (১৯৮৫), ‘খরাদাহ’, ‘একাত্তরের হৃদয়ভস্ম’, ‘বারুদপোড়া প্রহর’ (১৯৯৬) নামে উপন্যাস লিখেছেন।
সাহিত্যে অবদানের জন্য কবি আবুবকর সিদ্দিক বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, বঙ্গভাষা সংস্কৃতি প্রচার সমিতি পুরস্কার (কলকাতা), খুলনা সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, বাগেরহাট ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ঋষিজ পদকসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
এসইউ/জিকেএস