অলোক আচার্যের তিনটি কবিতা
যখন সন্ধ্যা নামে
কুমারী পাহাড়ের প্রেমে উড়ে যায় দামাল মেঘ
যৌবনবতী শালুকের তখন ঘরে ফেরার পালা
সন্ধ্যা নামে; ক্লান্ত বালিহাঁস জোৎস্নার তাপ পোহাতে
মাথা উঁচু করে শ্বাস নেয়। বহুদূরে নিয়ন বাতির আলোর
মতো অনুজ্জ্বল কয়েকটি তারা ক্রমাগত পৃথিবীমুখী হয়।
এই বিরানভূমিতে কয়েকটি অচ্যুত মানুষ ছাড়া
আর কেউ থাকে না। কাঁচপাতার বনে তখন নির্জন ডাহুক ওড়ে।
****
পুড়ে যায় চোখ
আমনের ক্ষেত দেখি ভরা হেমন্তে
কৃষাণীর সুঠাম দেহের ধান মাড়াই
সন্ধ্যায় কবিগানের সুর টানে আলোছায়া মঞ্চে
মেঠোপথ ধরে হেঁটে যায় সানগ্লাস পরা
কোনো তৃষ্ণার্ত যুবক—
আমি তার চোখে আগুন দেখি
যে আগুনে পুড়ে যায় চোখ-ফাগুন দুপুর।
চাদরে ঢাকা আঁধার নেমে আসে শরীরে
জোনাকির ভিড় বাড়ে শিমুলের বনে
রাত গভীর হলে—
চেয়ে থাকে সে যুবক নক্ষত্রের দিকে
শিমুলের বনে তখন লেগেছে আগুন জোনাকির টানে
সে আগুনে পুড়ে যায় চোখ-স্তব্ধ রাত্রি।
****
অকারণে শব্দগুলো
এখানে রাত্রি নীরব, বিকেলটা ধূসর
প্রেমগুলো রঙিন কাগজের মতো
উড়ে বেড়ায় প্রেমিকের বুক থেকে বুকে
বিকেলে ধলেশ্বরীর বুকে নৌকায় অলস সময়।
এখানে ঝিঁ ঝিঁ পোকারা অহংকারী
মাতাল, নিঃশব্দ আর অর্থহীন;
মগজে অনবরত প্রলাপের আসা-যাওয়া
মেদহীন শব্দগুলো অকারণে প্রতিদিন
আগুনের ফোয়ারা ছোটায়।
এসইউ/জিকেএস