অন্ধকার শহর এবং অন্য কবিতা
আনিস ফারদীন
আলোর এই ঝলমলে শহর আলোহীন ঠেকে
মজ্জা মগজে বাজে নীল শোকের মাতম
হাহাকার ওঠে যেন পুরো শরীরজুড়ে।
আলোর ছটা হারিয়ে সামনে দাঁড়ায় অন্ধকার
নিকষ কালো, অর্বাচীন এক নিঃস্তব্ধতা
আলোয় আলোয় পূর্ণ শহর হয়ে যায় অচেনা।
চারদিকে শোরগোল, কত হইচই আর আনন্দ
অথচ কী সুনসান নীরবতা, নিঃশব্দ ঠেকে সব
কর্ণকুহর সব শুনেও নীরব, শব্দগুলো অর্থহীন।
সব সুখ ভুলে গিয়ে দুঃখের সাগরে ভেলা ভাসানো
বেদনার নীলে ডুবে ডুবে হতাশায় নিমজ্জিত যেন
আলোর শহরে শুধু আলো নয় কিছুটা অন্ধকারও।
****
বৃষ্টি ও রোদ্দুর
বৃষ্টি চাইতে গিয়েই তো রোদ্দুরে পুড়ি
তীব্র রোদ্দুরে জ্বলসে যাই ক্রমশ
অঙ্গার হই, যন্ত্রণার তীব্র পারদে।
তেমনি মানুষ ভালোবাসা খোঁজে
অথচ পায় নিরেট জীবন্ত যন্ত্রণা
মানুষ তো জানে শুধু পুড়িয়ে দিতে।
পুড়তে গিয়ে অঙ্গার হয়
তবু মানুষ ভালোবাসা খোঁজে
বিনিময়ে মেলে শুধুই নীরবতা আর কান্না
সব চাওয়া যে নিজের হয় না,
নিজের হাতেও থাকে না!
****
ঘাসফুল ও বুনোফুল
কত ঘাসফুল আর বুনোফুল মাড়িয়ে যাই
হঠাৎ করেই যেন মায়ায় পড়ে যাই তাদের
দিব্যি উদাস হয়ে ওঠে আমার ইচ্ছেরা
অবাক নয়নে চেয়ে থাকি দুচোখ মেলে।
ঘাসফুল দেখে বিস্মিত হয়ে উঠি আচানকভাবে,
তারা সাজিয়ে রাখে আমার পথ কত মমতায়
আমি পিষে চলি, দুঃখ নিয়ে বুক পেতে দেয় তারা
অবহেলায় পিছু ফেলি তাদের, কী নির্লজ্জ!
আমি চেয়ে থাকি আনমনে আর ভেবে চলি
পৃথিবীর হিসেবগুলো সত্যি দুর্ভেদ্য, অসমান্তরাল
যে বুক পেতে দেয়, তাকে কত সহজে মাড়িয়ে যাই
আর যে পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়, তাকেই আপন করি।
এসইউ/জিকেএস