সুকুমার রায় সাহিত্য পদক পেলেন ৩ গুণীজন
লোকজ সাহিত্য-সংস্কৃতিতে কিশোরগঞ্জ জেলার রয়েছে বিশাল ঐতিহ্য। গ্রামবাংলার শ্বাশত রূপ বৈচিত্র্য ও সোনালি ঐতিহ্যের ধারায় কিশোরগঞ্জ বহন করছে একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস। এ জেলার লোকজ সংগীত, পালা, কীর্তন, কিসসা, জারি, বিয়ের প্রবাদ-প্রবচন, পুঁথি, টপ্পা, নৌকা বাইচের গান, হাস্য রসাত্মক শ্লোক, ধাঁ-ধাঁ ইত্যাদি সুপ্রাচীন ঐতিহ্যকে আজও স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তায় উজ্জ্বল রেখেছে।
লোকজ সাহিত্যের প্রাণ প্রাচুর্যের ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে ‘জেগে ওঠো নরসুন্দা’র সহযোগিতায় তিনদিন ব্যাপী পালিত উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে আগত কবি, লেখক, ছড়াকার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক যোগ দেন।
গত ২-৪ মার্চ উদযাপিত হয় ১৯তম কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব ও চন্দ্রাবতী মেলা-২০২৩। ২০০৫ সালে থেকে কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: কল্লোল যুগের কথাসাহিত্য নিয়ে দীপক বর্মনের একক বক্তৃতা
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের আদি নারী কবি চন্দ্রাবতী, দেওয়ানা মদিনা, বীরাঙ্গনা সখিনা, উপেন্দ্র কিশোর রায়, সুকুমার রায়সহ প্রখ্যাত কবিসহ শিল্প-সাহিত্যিকদের আলোকিত উত্তরাধিকার কিশোরগঞ্জ। শিল্পক্ষেত্রে এ জেলার অসংখ্য কীর্তিমান দেশ ও দেশের বাইরে রেখেছেন অসামান্য অবদান।
প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সাহিত্য পুরস্কার, ছড়া পুরস্কার এবং সাংগঠনিক পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব পরিচালনা পর্ষদ সুকুমার রায় সাহিত্য পুরস্কার, জ্যোতি হক ছড়া পুরস্কার এবং দাদা ভাই সাংগঠনিক পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।
২০২৩ সালের জন্য স্বপন ধর, মাহফুজা আরা পলক এবং মার্জিয়া লিপিকে সুকুমার রায় সাহিত্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধার মা’ গবেষণামূলক গ্রন্থের জন্য এবং সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্জিয়া লিপি অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সুকুমার রায় সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার পেলেন দন্ত্যস রওশন
মার্জিয়া লিপির জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলায়। বাবা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, মা ফিরোজা আক্তার। ২০১০ সালে মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গ্রন্থ ‘আমার মেয়ে: আত্মজার সাথে কথোপকথন’। পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য, মা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চর্চা ও গবেষণা মার্জিয়া লিপির প্রিয় বিষয়।
পেশাগতভাবে মার্জিয়া বাংলাদেশ বনবিভাগ ও পরিবেশ পরামর্শক (জাতীয়) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বেপজায় কর্মরত ছিলেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত উপস্থাপক। এ ছাড়াও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে বিভিন্ন সময়ে তার লেখা প্রকাশ হয়েছে।
এইচআর/এসইউ/জিকেএস