পাঁচটি প্রেমের কবিতা
শ্যামনগরের আকাশনীলায়
জানুয়ারির মাঝামাঝি, ঈষৎ ঠান্ডা
ক্রমাগত ঝিঁঝি পোকার ডাক
মাঝেমধ্যে মাথা দোলায়
গরান-ফুল-কেউরাবীথি।
সার্চবাতির কৃত্রিম আলো ঝিমোয় বনজুড়ে
জোনাকির আলো, জোয়ারের ডাক
পতঙ্গদের মাতলামি
আকাশনীলার বনবিলাসে।
ওই যে নদীর রুপালি ধারা
বারান্দায় গাছ ছুঁয়ে
শুধু দুটি প্রাণি জেগে এখানে
অসংখ্য ছোট প্রাণের আড্ডায়।
আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে
কীভাবে এগোতে হয় ভুলে গেছি।
****
ভালো লাগার রেণু
ইনানীর কোলে,
একাদশী পূর্ণিমায় মধ্যরাত
ঝিমোচ্ছে পৃথিবী
চাঁদের সঙ্গে সাগর জেগে।
নোনাগর্জনে ফেনিল ঢেউ
ফুরফুরে ভারী বাতাসে রেণু ওড়ে
ভালো লাগার, ভালোবাসার।
তোমার হাতটি ধরি?—
পাপ হবে না নিশ্চয়!
****
স্বর্গগিরি
আমার মানস পড়ে আছে সেইখানে।
এক উপত্যকা যুগলপাহাড়ে
খাঁচাবন্দি সিংহের মতো শুয়ে
মেঘ আর পাখি উড়ে যায় নীলাভ আকাশে
কাঠবিড়ালির মৌতাতে
রুপালি পতনের ধারে
ভ্রমর নেচে বেড়ায় সবুজের গায়ে
পারফিউমের মতো সুগন্ধ ছাড়ে রেণুগুলো
অর্কেস্ট্রার মতো গান করে ছোটপাখি-মৌমাছি-প্রজাপতি।
ও মেয়ে দাঁড়াও দেখি,
তোমার নাম দিলাম স্বর্গগিরি।
****
ধমনিতে তোমার ভালোবাসা
গতরাতে তোমাকে আবার স্বপ্নে দেখলাম
এক দ্রাঘিমা দূরে তোমার শহর।
স্বর্গ বলো প্রেম বলো দৃষ্টিসুখের কাছে
চোখের সৌন্দর্যের চেয়ে বেশি কিছু নেই আর।
স্বপ্নের কী জাদু! স্বর্গদূতেরা নাচে আমার হৃদয়ে—
আমার ধমনিতে মিশে যায়
তোমার ভালোবাসার রক্ত।
****
তোমাকেই দেখি
গোলাপের মতো ভোরে
পর্বতের মতো নির্বাক, রহস্যময়
তারার সঙ্গে তারারা কথা বলে
ধূসর আলোয় ঘুমোয় পৃথিবী।
নাম না-জানা একটি নদীর ওপর
নক্ষত্র জ্বলছে
আলোর কোষ ভেঙে দ্বিগুণ হচ্ছে প্রতিবার
কুয়াশায় চকচকে মেঠোপথ ঝলমল করে
জ্যোৎস্নার মাতাল উল্লাসে।
এই পথ এই ভোরে
নদীর স্রোতে শুধু তোমাকেই দেখি।
এসইউ/জিকেএস