দীর্ঘশ্বাস ও অন্যান্য কবিতা
দীর্ঘশ্বাস
আমার শূন্য হৃদয়
একমুঠো ভোরের বাতাস চায়
চায় একগাদা নীল আকাশ—
এখানেই পেতাম আগে।
সবুজ হচ্ছে ক্রমশ ধূসর
কলতানের জায়গায় এখন
পাথর ইট সিমেন্ট, কর্কশধ্বনি।
হৃদয়ের কথা শুনতে চায় না কেউ আর
শরীরের ব্যথা দেখে না কেউ।
‘বনলতা সেন’, ‘মেজদিদি’, ‘বিদ্রোহী’ কী!
পেরিয়ে পেরিয়ে সময়গুলো এখন শুধুই দীর্ঘশ্বাস।
****
আটষট্টি হাজার পৃষ্ঠা
এখানে বারুদের গন্ধ নেই, যন্ত্রের যন্ত্রণা নেই
এখানে হিমেল বাতাস বয়ে যায়
শোনা যায় কুলকুল ধ্বনি।
এখানে শিউলিরা ঝরে রাত সকাল
এখানে ভাঁটফুল ফোটে
শালিকেরা ডাকে সোনারোদ মেখে।
এখানে চিলের ডানায় দোয়েলের শিস
মৌমাছিদের মৌতাতে টুনটুনির বাঁধা
ঘাসের মাথায় হিরেরা জ্বলে আলোর সাথে।
কোথায় পাবে এ দেখা?
বই খুলে দ্যাখো, রয়েছে আটষট্টি হাজার পৃষ্ঠা
সবুজ প্রচ্ছদে।
****
মেঠোপথ
পেছনে ডাকে কে একজন
—‘কে যাও? কে যাও তুমি?’
ফেরার মুহূর্তে মুহূর্তে বিচিত্র ছোঁয়া
আবছা বাতাসের ঢেউ, খেজুরগাছে দোয়েলের শিস।
কান পেতে শুনি
ঝিঁঝির ডাক, চড়ুইয়ের আড্ডা, তৃণদের হৈ-হুল্লোড়
শিশিরের শব্দে কাঠমল্লিকারা হাসে
জড়ায়ে রয়েছে আলোকলতা ভাঁটফুলের গায়ে
ফোটেনি এখনও সূর্য
শালিকের ডানায় সোনারোদের আধো ঝিলিক।
হঠাৎই লতা-পাতারা পা টেনে ধরে
কুয়াশার ভিড়ে হারিয়ে গেল দেবী।
এসইউ/জিকেএস