বাবার জন্য এম এ রহমানের দুটি কবিতা
বাবা, এক অভয়ারণ্য
একটি বিশ্বস্ত হাত যার করতলে থেকে
আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি অনাদিকাল
যার গায়ের ঘামের ফোঁটা আমার দৃষ্টির
আজন্ম তৃষ্ণাকে জলপান করে শীতল রাখে।
তুমুল বৃষ্টিতে ছাতা হয়ে নিজে ভিজে
আমাকে এগিয়ে দেয় জীবনের স্বপ্নপথে
বটবৃক্ষের মতোই চৈতালী উত্তাপে ছায়া দেয়
অথচ তাকে কখনো বলা হয়নি হৃদদরজা খুলে
বাবা, আমি তোমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি।
অথচ সকলে জানে এ পৃথিবীতে তুমি
আমার অস্তিত্বে শিরা-উপশিরা প্রতিকোষে
কি সুঘন প্রগাঢ়তা নিয়ে মিশে থাকো।
সময়ের আলপথে হেঁটে হেঁটে প্রতিদিন
একটু একটু করে তুমি হচ্ছি আর অনাবিষ্কৃত
তোমার আকাশে দাঁড়িয়ে ভাবছি—
আয়ুগুলো প্রতিদিন কোথায় হারায়?
****
আমাদের বাবা
একটি আঙুল, যা প্রথম হাঁটতে শেখায়
উঠে দাঁড়াবার সাহস জোগায় এ ধরায়
শত ঝড়-ঝঞ্ঝায় মাথার ’পরে ছাতা হয়
নিজে ভিজে শুকনো রাখে আমাকে।
এক বটবৃক্ষ, যার সুশীতল ছায়াতলে
চৈত্রের রোদ্দুরে পথিকেরা ছায়া পায়
প্রাণবন্ত হয় মন, ক্লেদ—ক্লান্ত শরীরের।
সে আমার পিতা, আমাদের বাবা
যে নিজেকে বিসর্জন দেয়
লালায়িত পৃথিবীতে, বাবা ডাক শুনে।
বুকের ভেতর হাজারো বেদনা নিয়ে
সন্তানের হাসিমাখা মুখখানা দেখে
পৃথিবীকে ছালাম জানাতে চায়
সে আমার পিতা, আমাদের বাবা।
এসইউ/এমএস