ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

ডুবোচর ও অন্যান্য কবিতা

খান মুহাম্মদ রুমেল | প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ১৮ মে ২০২২

ডুবোচর

ডুবতে ডুবতে অতলে হারাই
তারপরই জেগে উঠি আমরা…
ডুবোচর!
নিঃশেষের শেষ বিন্দুতে চলে গেলেই
বের হয়ে আসে সক্ষমতার আলো…
আমাদের!
আমরা লড়ি পর্বতের বিরুদ্ধে
বুক টানটান দাঁড়াই স্রোতের বিপরীতে।
দমবন্ধ সময় তাতায় আমাদের
জাগায় নতুন করে, নতুনের সুরে।
মাটি কামড়ে পড়ে থেকে… ভাবি
কচ্ছপ জীবনের নিয়তি আমাদের সাফল্য!
ভাবনার দুয়ারে আগল তুলি না কখনো
সময় হোক যতোই রুক্ষ বৈরি।
সীমানার বাইরে যাওয়ার সাহস
দেবে আমাদের অজর অমরত্ব!
সুনীল আকাশ আমাদের শেষ ঠিকানা
তবুও…
ধরে রাখি সাগর জলের মায়া।
বিষের বালিতে মেখেও মুক্তো ধরে রাখি…
আমরা শতবর্ষী ঝিনুক!
ভেসে গিয়ে, উড়ে গিয়ে… ঠাঁই খুঁজি আমরা
পরস্পরের বুকে!
আদিম দমনের জলে জমে জমে
আমরা অবিনাশী ফসিল!
আমাদের ধ্বংস নেই, আছে প্রবল বিশ্বাস…
সৃষ্টি এবং বিজয় আমাদের যৌথ গন্তব্য!

ডুবতে ডুবতে অতলে হারাই আমি
আর তাতেই তুমি জেগে জেগে ওঠো!

****

প্রথম হওয়া

আমি কখনো প্রথম হইনি!
তাগিদ ছিল না—
একেবারেই না!

বরাবরই পেছন সারিতে ছিল নাম আমার।
দেখেছি উল্লাস প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয়ের
শেষ সারিতে বসে আনমনে!
প্রথম কাতারে থাকার মন্ত্রণা—দিয়েছে কানে অনেকেই
বলেছে দৌড়াতে হবে দ্রুত আরও দ্রুত পায়ে।
বদলে আমি আরও অলস হয়েছি
শুনে সেসব অমৃত কথন।

তোমরা কেউ প্রথম হয়ো না—
ছুট না প্রথমের পেছনে।
অন্যকে হারিয়ে দিয়ে পৈশাচিক আনন্দ পাবে
তবে বিজয়ের গৌরব নেই তাতে।
আছে—হাজার পরাজিতের চাপা ক্রন্দন।

আমি কখনো প্রথম হইনি!
তাগিদ ছিল না—
এখনো নেই!

****

বন্ধ্যাকালের স্বপ্ন

এই যে ধরো—
কবিতা-টবিতা লেখা হচ্ছে না আর!
খাতা-টাতা সব পড়ে আছে—শান্ত কুমারী নারীর মতো
শব্দের আঁচড়ে উঠছে না জেগে সুখের শীৎকারে!
শিউলির শুভ্রতায় ছড়াচ্ছে না সৌরভ।

এই যে ধরো—
বেঁচে আছি একেবারেই নিষ্প্রাণ ম্রিয়মান।
শাণিত শব্দেরা মোহিত ছন্দেরা লালিত ভাবনারা—
লুকিয়ে আছে কোন অভিমানে কার অভিশাপে!

আসুক কাম দেবী সুতীব্র আওয়াজে—
ফালা ফালা করুক এই বন্ধ্যাকাল!
জেগে উঠুক সরবে সতেজ পঙক্তিমালা
কবিতায় শ্বাস নিয়ে বিলিয়ে দেবো—
বুকপকেটের সব স্বপ্ন!

****

কড়িবর্গায় নির্ঘুম

এই শহরে ভালোবাসা ঝরে রোজ রাতে
পিতলের কলসিতে জল পড়ার মতো টপটপ শব্দ!
চমকে গিয়ে সিলিংয়ে তাকাই—
কড়িবর্গায় ঝুলে থাকে ফিকে রং স্বপ্ন!
আমি তাকে ধরতে যাই, ছুঁতে চাই যেই—
অমনি পড়ে যায় হাত গলে!
ফিসফিসিয়ে ওঠে কেউ চিকন সুরে—
সে তো দূরে, অনেক দূরে—পাবে কী করে!

এ কেমন অচিন ব্যাধি বলো—
জোছনার আল্পনায় তোমাকে খোঁজার!

পিপাসায় ফেটে যায় বুকের ছাতি
শূন্য জানালায় খুঁজি—তুমি নেই
কড়িবর্গায় ঝুলে থাকে নির্ঘুম আকাশ!

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন