ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

মৃত্যু ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ: শেষ পর্ব

সিদ্ধার্থ শংকর জোয়ার্দ্দার | প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অন্যদিকে, ‘পৃথিবী’তে কবি আবির্ভূত হয়েছেন জীবন-চক্রের এক নির্মোহ পরিব্রাজক হিসেবে। প্রণতি জানিয়ে তিনি শুরু করেছেন, এই মহাযাত্রার একজন অতিক্ষুদ্র পরিভ্রমণকারী হিসেবে। এ যেন গভীর এক আত্মকথন। ইতিহাসের আদিপর্বে পৃথিবী ক্রমান্বয়ে বর্বর থেকে ধীরে ধীরে সুশৃঙ্খল স্থিতিবস্থায় পৌঁছায়, জীবধাত্রীর একান্ত নিবদনে শুরু হয় জীবলীলা। ষড়ঋতুর কাল পরিক্রমায় পৃথিবীর নানারকম চেহারার যে বৈচিত্র্য সেখানে ব্যক্তি আমি কে? কেন আমার এই আগমন? না আসলেই বা কী হতো? ব্যক্তি আমি এই বিশ্ব আমির অতি ক্ষুদ্র একাংশ; কবির একান্ত নিবেদন এই যে, ‘তবে দিয়ো তোমার মাটির ফোঁটার একটি তিলক আমার কপালে’। পৃথিবীর নিয়ত চলার পথে অগণিত জীবসকলের যে হার না মানা পদযাত্রা তারই এক নগণ্য সদস্য হিসেবে কবির নিবেদন তাকে ভোলবার আগে।

সংশয়
রবীন্দ্রচিন্তার মাঝে নিশ্চিতভাবে ফাটল ধরেছে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে জীবনবোধের পরিবর্তন তো হয়েছেই। এই পরিবর্তিত ভাবনার প্রতিফলন ঘটে শেষের লেখাগুলোর মাঝে। অষ্টাদশ শতকের স্কটিশ কবি রবার্ট বার্নসের ‘ডেস্পন্ডেন্সি’ কবিতা ছিল এমনঃ
Oppress’d with grief, oppress’d with care,
A burden more than I can bear,
I set me down and sigh;
O life! thou art a galling load,
Along a rough, a weary road,
To wretches such as I!
Dim backward as I cast my view,
What sick’ning scenes appear!
What sorrows yet may pierce me through,
Too justly I may fear!
Still caring, despairing,
Must be my bitter doom;
My woes here shall close ne’er
But with the closing tomb!

রবীন্দ্রনাথ ঠিক একই সুরে লিখলেন,
‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে
এসেছে আমার দ্বারে;
একমাত্র অস্ত্র তার দেখেছিনু
কষ্টের বিকৃত ভান, ত্রাসের বিকট ভঙ্গি যত—
অন্ধকারে ছলনার ভূমিকা তাহার।
... ... ...
যতবার ভয়ের মুখোশ তার করেছি বিশ্বাস
ততবার হয়েছে অনর্থ পরাজয়।
এই হার-জিত খেলা, জীবনের মিথ্যা এ কুহক,
শিশুকাল হতে বিজড়িত পদে পদে এই বিভীষিকা—
দুঃখের পরিহাসে ভরা।
ভয়ের বিচিত্র চলচ্ছবি—
মৃত্যুর নিপুণ শিল্প বিকীর্ণ আঁধারে।।’

রবীন্দ্রচিন্তার দার্শনিক অভিব্যক্তি বিশেষ করে সংশয়ী ভাবনার সরল দ্যোতনা প্রকাশিত হয়েছে তাঁর শেষ লেখায়। গ্রন্থটির নামকরণ তিনি করে যেতে পারেননি। মোট ১৫টি কবিতা সম্বলিত গ্রন্থের ভূমিকায় কবি-পুত্র রথীন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘‘শেষ লেখা’র কয়েকটি কবিতা তাঁহার স্বহস্তলিখিত; অনেকগুলি শয্যাশায়ী অবস্থায় মুখে মুখে রচিত, নিকটে যাঁহারা থাকিতেন তাঁহারা সেগুলি লিখিয়া লইতেন, পরে তিনি সেগুলি সংশোধন করিয়া মুদ্রণের অনুমতি দিতেন।’ শেষ লেখার প্রথম কবিতা সম্মুখে শান্তি পারাবার গানটি তিনি লিখেছিলেন ডাকঘর নাটকের জন্য। কিন্তু সেখানে গানটা গাওয়া হয় না। কবির শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁর দেহাবসানের পর শেষ যাত্রায় শান্তিনিকেতনে সন্ধ্যায় মন্দিরে গাওয়া হয়। স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, তিনি মর্তলোকের বন্ধন থেকে ছুটি নিয়ে অনন্তের পথে যে যাত্রা করছেন, সেখানে বিরাট বিশ্ব বাহু মেলে অপেক্ষা করছে। সেই মহা অজানার কেন্দ্রমূলে তিনি যাত্রা করেছেন, তবে নির্ভয়ে। একই সাথে তিনি শঙ্কা প্রকাশও করছেন এই বলে যে, ‘মুক্তিদাতা, তোমার ক্ষমা, তোমার দয়া/ হবে চিরপাথেয় চির যাত্রার।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে ইচ্ছে করছে বৃটিশ দার্শনিক আলফ্রেড জুলস এয়ারের কথা। এয়ার ছিলেন ব্রিটিশ নাস্তিক দার্শনিকদের মাঝে সবচেয়ে প্রভাবশালী। বিজ্ঞানের দার্শনিক ও যৌক্তিক অভিজ্ঞতাবাদে তাঁর অবদান অপরিসীম। প্রায় সারাজীবন ঈশ্বরে অবিশ্বাসী এয়ার ১৯৮৮ সালে মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪ মিনিটের জন্য মৃত বলে ঘোষিত হয়েছিলেন। ঠিক এই সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি পরবর্তীতে লিখেছিলেন অত্যন্ত রোমাঞ্চকর একটি নিবন্ধ, What I saw When I was Dead। প্রবন্ধের পরতে পরতে ‘মৃত্যু পরবর্তী’ অতি অল্প সময়ের অত্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ যেমন লিখেছেন, ‘সমুখে শান্তি পারাবার, ভাসাও তরনী হে কর্ণধর।’ এয়ার লিখছেন, ‘I was confronted by a red light, exceedingly bright, and also very painful even when I turned away from it. I was aware that this light was responsible for the government of the universe...।’ এয়ারের এই বক্তব্যের সাথে রবিঠাকুরের মৃত্যুভয় মোটেই এক রকম নয়। কিন্তু এর মধ্যেও কোথাও যেন একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়! মৃত্যু কী সবকিছু গ্রাস করে? শেষ করে দিতে পারে, জীবনের সব সঞ্চয়? ‘রাহুর মতন মৃত্যু’-তে তিনি দ্বীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘রাহুর মতন মৃত্যু/ শুধু ফেলে ছায়া/ পারে না করিতে গ্রাস জীবনের স্বর্গীয় অমৃত/ জড়ের কবলে/ এ কথা নিশ্চিত মনে জানি।’

শেষের রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্র ভাবনায় জীবন চিন্তার যে রূপান্তর ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গতিময়তা। জীবনের ছান্দসিক রূপান্তর যেন উদ্দেশ্যমুখী এক অব্যর্থ ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হার না মানা তরণী। সেখানে মৃত্যু একটা ছোট্ট রূপান্তর মাত্র। এই রূপের পরিবর্তন মহাপ্রস্থানের এক একটা ঘাটে ঘাটে খেয়ার তরীর সাময়িক বিরতি! শেষের দিকে কবির রোগশয্যা ও সেখান থেকে উত্তরণ পর্বে লিখেছেন অনেক কবিতা। এসব কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে জীবনের শেষে ভাবনার সংশ্লেষণ। পাহাড়ে পরিভ্রমণের সময় পাহাড়কে সঠিকভাবে উপলব্ধিতে আনা যায় না, সঠিকভাবে বুঝতে অনেক দূরে গিয়ে তাকাতে হয়, ঠিক তেমনি রবীন্দ্রনাথ জীবনকে আরও নিবিড়ভাবে বুঝতে জীবন-মরণের সীমানায় পৌঁছেছেন। জীবনের ‘সিনপ্টিক ভিউ’ তিনি মানস পটে এঁকেছেন দক্ষ তুলির আঁচড়ে। এ জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে যৌবন, পৌঢ়ত্বের করিডোর মাড়িয়ে মৃত্যু দুয়ারের সিংহদ্বারে পৌঁছানো অবধি। সুবোধ সেনগুপ্ত যথার্থই লিখছেন, ‘তাই তাহার মনে বিশেষ করিয়া দোলা দিয়াছে জন্ম মৃত্যুর পরিক্রমণ ও সৃষ্টির রহস্য এবং এই পরিক্রমণ ও রহস্যকে তিনি দেখিয়াছেন এই বিরাট প্রতিবেশের মধ্যে। সৃষ্টি ও বিলয়ের প্রশ্ন নানাভাবে তাহাকে বিচলিত করিয়াছে; কবির জিজ্ঞাসা বৈজ্ঞানিক তথ্য ও দার্শনিক চিন্তার সঙ্গে জড়িত হইয়া বিচিত্র অভিব্যক্তি পাইয়াছে।’ (শ্রী সুবোধ চন্দ্র সেনগুপ্ত, রবীন্দ্রনাথ, ১৫২)

বিশ্বজগতের বিপুল তরঙ্গের মাঝে নিজের অবস্থান, উৎপত্তি ও বিলয়ের এক অবশ্যিক পরিক্রমা রবীন্দ্র উপাসনার এক বড় দার্শনিক ভিত্তি। সৃষ্টি কবে কীভাবে হয়েছিল সেক্ষণ আমাদের হয়তো অনাবিষ্কৃত; কী উদ্দেশ্যে আমাদের এই পথ চলা সেটাও অকল্পনীয়। আবার এই মহারণ্যের পূর্ণ বিলয়ও আমাদের নিকট রহস্যঘেরা। তাঁর নিজের কথায়, ‘জীবন পবিত্র জানি/ অভাব্য স্বরূপ তার/ অজ্ঞেয় রহস্য-উৎস হতে/ পেয়েছে প্রকাশ/ কোন অলক্ষিত পথ দিয়ে,/ সন্ধান মেলে না তার।’ বিজ্ঞানের গবেষণার সাথে রবিঠাকুরের কোনো বিরোধ নেই। কোনো অজানা ক্ষণে সৃষ্টির এক নব প্রত্যুষে সূর্যের আবির্ভাব। তার বিপুল তেজে ধরাপৃষ্ঠ আলোকিত হয়েছে, শুরু হয়েছে জীবলীলা। মহা সৃষ্টির তুলনায় পৃথিবী তথা আমাদের জীবন অতি নগণ্য। জীবপালিনী আমাদের পুষেছে তার ছোট ছোট পিঞ্জরে। মহাকালের অতি বিশালত্বের ক্ষুদ্র কোণে আমাদের বেড়ে ওঠা, এর ভেতরই যে বিশভরা প্রাণ তার মাঝখানে আমি কেন্দ্রবিন্দু। তবে এই বাণীধারা যুগান্তরের স্রোতে ভেসে চলছে অনন্তের পথে। ‘সেদিন সেতো জানে না কেউ/ আকাশ ভ’রে কিসের সে ঢেউ,/ তোমার সুরের তরী, আমার রঙীন ফুলে কূল নিল গো॥/ সেদিন আমার মনে হ’ল তোমার গানের তান ধ’রে/ আমার প্রাণে ফুল-ফোটানো রইবে চিরকাল ধ’রে॥’ সুবোধচন্দ্র আরও লিখছেন, ‘এই প্রাণ ধারার রহস্যের সঙ্গে কবির নিজের জীবনের রহস্যও জড়িত হইয়া আছে। কোন এক যুগান্তের বাণীধারা নক্ষত্রে নক্ষত্রে ঠেকিয়া অবশেষে তাঁহার মাঝে আসিয়া সংহত হইয়াছে, আবার একদিন বহুকোটি বৎসরের শূন্য যাত্রাপথে বিলীন হইয়া যাইবে। এই পরিণতির নিগুঢ় রহস্যের প্রয়োজন ও উদ্দেশ্য অজ্ঞাত।’ (প্রাগুক্ত, ১৫৩) এই জন্য অনেকে মনে করছেন, রবীন্দ্র দর্শন আবশ্যিকভাবে একটা সংশয়ী স্রোতধারার খরস্রোতে মিশেছে কিছুটা দ্বিধা নিয়ে।

‘শেষ সপ্তক’-এর পরতে পরতে কবিচিত্ত প্রলম্বিত হয়েছে অজানা অধ্যায়ে। ফিরে তাকিয়েছে পেছনের দরজার দিকে। কখন বিমর্ষিত পথিকের ন্যায় বটবৃক্ষের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে মন, আবার কখন নিজের অবস্থান নিয়ে বিশ্বভূমির রঙ্গলীলায় আচমকা রংধনুর রঙের মাঝে চিরকাল থেকে যেতে চেয়েছে। এখানে জন্ম আর মৃত্যু মিশে গেছে সাতটা রঙের চোরাবালিতে। তিনি লিখছেন,
অসীম আকাশে কালের তরী চলছে
রেখার যাত্রী নিয়ে,
অন্ধকারের ভূমিকায় তাদের কেবল
আকারের নৃত্য;
নির্বাক অসীমের বাণী
বাক্যহীন সীমার ভাষায়, অন্তহীন ইঙ্গিতে।
... ...
সেখান থেকে এলেম আর-এক নিভৃতে,
এখানে আপনি যা আঁকছি, দেখছি তাই আপনি।
সমস্ত বিশ্বজুড়ে দেবতার দেখবার আসন,
আমিও বসেছি তাঁরই পাদপীঠে,
রচনা করছি দেখা।

উপসংহার
আগেই উল্লেখ করেছি, রবীন্দ্র মৃত্যুভাবনা একটা দ্বান্দ্বিক প্রেক্ষাপটের ভেতর দিয়ে এগিয়েছে নানা ভঙ্গিতে। সেখানে সরল রৈখিক ঋজু চেতনা খোঁজ করা অবান্তর। প্রকৃতি, প্রেম, মৃত্যু কিম্বা জন্ম এক সূত্রে গেথে তৈরি হয়েছে অপূর্ব জীবন মালা। ‘কালের অপ্রতিহত গতিবেগ, মৃত্যুর অনিবার্য মধ্যবর্তীতা–ইহার মধ্য দিয়া যে অবিনাশী প্রাণলীলা উৎসরিত হইতেছে তাহাই সামান্যের উপর অসামান্যের মহিমা আরোপিত করিতেছে।’ (সুবোধ, ১৬০)। পূর্ব দিগন্তে যে সূর্য একদিন আলো বিস্তার করে সমস্ত ধরাভূমি অপূর্ব রশ্মিমালায় পরিপ্লাবিত করেছিল তার বিদায় লগ্নে যেন সে পরিপূর্ণ। বিমর্ষ সাহানার সুরের মাঝে যেন কোনো আর্তনাদ নেই, নেই ফেলে আসা দিনের অনুশোচনা। সেখানে কেবলই স্মৃতির মালা। রোগ শয্যায় তাই লিখছেন,
একা বসে আছি হেথায়
যাতায়াতের পথের তীরে।
যারা বিহান বেলায় গানের খেয়া
আনল বেয়ে প্রাণের ঘাটে,
আলোছায়ার নিত্য নাটে
সাঁঝের বেলায় ছায়ায় তা’রা
মিলায় ধীরে।
আজকে তা’রা এলো আমার
স্বপ্নলোকের দুয়ার ঘিরে,
সুর হারা সব ব্যথা যত
একতারা তা’র খুঁজে ফিরে।
প্রহর পরে প্রহর যে যায়
বসে বসে কেবল গণি
নীরব জপের মালার ধ্বনি
অন্ধকারের শিরে শিরে।

৩০ জুলাই সকাল সাড়ে নয়টা, ১৯৪১। রবিঠাকুর তাঁর সর্বশেষ লেখায় ফেলে গেলেন জগত সংসারের সবচেয়ে অনির্ধারিত প্রশ্নটা; সবচেয়ে পুরাতন অমীমাংসিত দার্শনিক প্রত্যয়টা। কবিতাট যদিও কবির নিজের কাছে দ্বিতীয়বারের জন্য ‘অসংশোধিত’ তবুও এর মর্মবাণী উপলব্ধি করতে বেগ পেতে হয় না। যে পথ তৈরি হয়েছিল অনন্তের যাত্রার জন্য, যে পথ ছিল অজানিত, যে পথ ধরে অগণিত লক্ষ-কোটি প্রাণ চলেছে অজানার মিছিলে, সেই পথ তারাও। তিনিও চললেন ‘বিচিত্র ছলনা জালে’ তৈরি হওয়া মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদে। বিশ্বলোক যে রহস্যে অবগুণ্ঠিত সেই গোপন রহস্যের মাঝে লুকিয়ে আছে সত্য। ‘সত্যেরে সে পায় আপন আলক-ধৌত অন্তরে অন্তরে’। ইঙ্গিত স্পষ্ট। যে উপনিষদ তাঁকে শিশুমন থেকে বার্ধক্যের শেষ সীমানায় পৌঁছে দিয়েছে, গভীর থেকে গভীরতর অনুভূতিতে অবগাহন করিয়েছে, সেই উপনিষদের কাছেই শেষে আত্মসমর্পণ করলেন। শেষ পুরস্কার নিয়ে গেল তার আপন ভান্ডারে। আবু সইদ আইয়ুব এই শেষ যাত্রাকে দেখেছেন এভাবে, ‘নিভন্ত আলোর দিকে ইঙ্গিত করেই কি ব্রাত্য কবি জীবনের শেষ কবিতায় প্রকৃতিকে সম্বোধন করে বললেন, ‘মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুন হাতে/ সরল জীবনে?’ কিন্তু ঐতিহ্যবাহিত শাস্ত্র নির্দিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসের পথ অন্ধকার হয়ে গেলেও নক্ষত্রখোচিত আকাশ তাঁকে ‘আপন আলোয় ধৌত’ অন্তরের যে পথ দেখাল ‘সে যে চির স্বচ্ছ’। সেই পথ বেয়ে তিনি চলে গেলেন আট দিন পর, বাইশে শ্রাবণে।’ (আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ, ২৫৩)।

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন