মৃত্যু ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ: পর্ব-০১
রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘ জীবনের বিচিত্র ভাবনার মধ্যে সমগ্র মৃত্যু ভাবনাকে একত্রিত করা অত্যন্ত কঠিন কাজ, শুধু কঠিনই না রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বললেও বেশি বলা হবে না। এর একটাই কারণ, তা হচ্ছে রবীন্দ্র মৃত্যুচিন্তা সময়ের সাথে সাথে নানাভাবে মোড় নিয়েছে, বাঁকে বাঁকে চিন্তাগুলো এক পরিণতির দিকে দ্বান্দ্বিকভাবে এগিয়েছে। নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সাথে নিজের জিজ্ঞাসার একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে; অতি আপনজনের বিদায় তাঁকে বিমর্ষিত করেছে, আবার একই সাথে এই মৃত্যু নিয়ে তাঁর দার্শনিক মন কখনো তাঁকে দিয়েছে প্রবোধ; কখন দিয়েছে অমৃতের শৈল্পিক স্পর্শ–সব মিলিয়ে চূড়ান্তভাবে রবীন্দ্র মৃত্যুভাবনা পৌঁছেছে দ্বান্দ্বিকতার অপূর্ব মহাসম্মিলনে। আদতে যে দ্বান্দ্বিকতার কথা বলা হচ্ছে তা দু’টো বিপরীত প্রত্যয়ের সম্মিলিত অভিঘাত। অর্থাৎ তিনি মৃত্যুকে একদিকে অবিসম্বাদিতভাবে আলিঙ্গন করেছেন, অন্যদিকে তার আগমনে প্রকম্পিত হয়েছে হৃদয় বীণার সকল তন্ত্রী। মোটাদাগে বলতে গেলে, সংশয় ও আস্থার বিচিত্র সম্মিলন ঘটেছে তাঁর গান, কবিতা, প্রবন্ধ তথা সাহিত্যের নানান উপাংশে। হয়তো আলফ্রেড লর্ড টেনিসনের ভাষায়, “All things have rest, and ripen toward the grave/ In silence–ripen, fall, and cease:/ Give us long rest or death, dark death, or dreamful ease.”
রবিঠাকুরের চিন্তার এই বহুমুখী ও বিচিত্র সম্মিলন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে একটু আগ বাড়িয়ে বলে রাখি, তাঁর জীবন ও মৃত্যুদর্শনের সাথে পাশ্চাত্যের অনেক ভাববাদী দার্শনিক চিন্তার ভীষণ মিল খুঁজে পাওয়া সম্ভব। অবশ্য পৃথিবীর সব ভাববাদী দার্শনিকের মধ্যে এক ধরনের সাধারণ মিল আছে। জগতের সকল বস্তুই কোনো না কোনভাবে সম্পর্কিত, কোনো কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়, পৃথক নয় কেউ একে অন্য থেকে। এই গভীরতম অন্ত্যমিল শুধু একটা উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করেই, আর তা হচ্ছে “ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা প্রভু, তোমার পানে, তোমার পানে, তোমার পানে”। ভাববাদের সাথে আধাত্মবাদের যে অবশ্যম্ভাবী গাঁটছড়া তাতে বলাই যেতে পারে, বিশ্বসৃষ্টির যে অপার রহস্য তা এক উদ্দেশ্যমুখী নির্বাচনকে সামনে রেখে; আর সে যাত্রায় জন্ম বা মৃত্যু যেন এক সুতোয় গাঁথা একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন-মালা। গীতাঞ্জলিতে তিনি লিখছেন, “পাঠাইলে আজি মৃত্যুর দূত আমার ঘরের দ্বারে,/ তব আহ্বান করি সে বহন/ পার হয়ে এলো পারে। আজি এ রজনী তিমির-আঁধার, ভয়-ভরাতুর হৃদয় আমার,/ তবু দীপ হাতে খুলি দিয়া দ্বার/ নামিয়া লইব তারে” (৮৬)।
Phaedo-তে প্লেটো লিখছেন মানব জীবনের অবধারিত দু’টো বৈশিষ্ট্যঃ একটি শরীর অন্যটা আত্মা। শরীর নশ্বর কিন্তু আত্মা অনন্ত। আত্মার এই অনন্ত যাত্রা শুরু হয় মৃত্যুর মাধ্যমে। কাজেই প্লেটোর কাছে তাঁর গুরু সক্রেটিসের হত্যাকাণ্ড ঠিক যেন মৃত্যু নয়, এক পূর্ণতার দিকে অনন্তের মহাগমন। জার্মান দার্শনিক হাইডেগার তাঁর Being and Time এ ঘোষণা দিয়েছেন “To be is to be towards death”। মৃত্যু যেন এক পূর্ণতা, অসীমের সাথে সসীমের এক মহামিলন। গীতাঞ্জলির ৯১-সংখ্যক কবিতায় ঠিক এই কথাটাই বলতে চেয়েছেন, “ওগো আমার এই জীবনের শেষ পরিপূর্ণতা,/ মরণ, আমার মরণ, তুমি কও আমারে কথা।/ সারা জনম তোমার লাগি/ প্রতিদিন যে আছি জাগি,/ তোমার তরে বহে বেড়াই/ দুঃখসুখের ব্যথা”। আমার ‘পূর্ণমিলন’-এ কবি বলছেন, “নিশিদিন কাঁদি সখী মিলনের তরে/ যে মিলন ক্ষুধাতুর মৃত্যুর মতন।/ লও লও বেঁধে লও কেড়ে লও মোরে—/ লও লজ্জা, লও বস্ত্র, লও আবরণ”। তবে বলতেই হবে, মৃত্যু যেমন পূর্ণতা দিয়েছে আবার সর্বসংহারী সেই মৃত্যুই আবার গ্রাস করেছে সব অর্জন, থামিয়ে দিয়েছে জীবনের জয়রথ। রবীন্দ্রচিন্তায় মৃত্যু এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে যেখানে জীবন-মরণ মিশেছে চেনা অচেনার অতি সঙ্গোপনে। নিজের কথায়, “এখন জীবন মরণ দুদিক দিয়ে নেবে আমায় টানি”।
প্রথমেই বলে রাখা ভালো, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন উপনিষদিক ভাবনার একান্ত বরপুত্র। দ্বিধাহীনভাবে বলা যায়, তাঁর সব চিন্তার মাঝে লুকিয়ে আছে উপনিষদিক দর্শনের মর্মবাণী—‘ইশা বাস্য মিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগতাং জগত’ (এই গতিশীল বিশ্বে যাহা কিছু চলমান বস্তু আছে তাহা ইশ্বরের বাসের নিমিত্ত মনে করিবে)। কবিতা, গদ্য, প্রবন্ধ এবং গানের ভেতর প্রকাশিত হয়েছে এই দর্শনের অন্তর্গূঢ় রহস্য। অর্থাৎ চিন্তার সকল অংশের মাঝে তিনি ছিলেন ঋজু যার মর্মার্থ গিয়ে পৌঁছেছে বেদান্তের মর্মমূলে। মৃত্যুকে তিনি আলিঙ্গন করেছেন একান্তে, গ্রহণ করেছেন বন্ধুরূপে, ভেবেছেন একান্ত সখা ও প্রেমিক হিসেবে। আবার কোনো সময় মৃত্যুকে বলেছেন অতি নীচ, অনুদার, সর্বগ্রাসী ও স্বার্থপর। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর জীবন-শেষের উপলব্ধি যা দার্শনিক সংশয়ী চিন্তায় পরিপূর্ণ, অনেকটা অস্পষ্ট, দ্বিধাযুক্ত ও পরিশ্রান্ত পথিকের ন্যায় বেশ খানিকটা উদাসী। আমরা এখানে তাঁর চিন্তার একটা রেখাচিত্র তুলে ধরবো।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যমানস অতি শৈশব থেকে প্রলম্বিত হয়েছে জীবনের নানাভাগে এবং সেটা কৈশোর, যৌবন ও বার্ধক্যের বিভিন্ন খাঁজে আটকে গেছে কিছুকাল। তারপর আবার সেখান থেকে উদ্গত হয়েছে নতুন চিন্তার বীজ। পৌঁছেছে সীমা থেকে অসীমে, ভূমি থেকে ভূমায় আর কাব্য থেকে দর্শনে। এক নিরন্তর পরিক্রমায় নব উচ্ছ্বাসের যাত্রী রবীন্দ্রনাথ তাই একজন সুদূরের পিয়াসী। তবে এক ও অদ্বিতীয় সত্তার প্রতি একান্ত নিবেদনে তিনি সমর্পণ করেছেন সকল ভাবনাকে, সকল রসের ধারাকে। “আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ”-এ আবু সয়ীদ আইয়ুব লিখছেন, ‘প্রাচীন পারস্য মতে এ-জগৎ শুভাশুভ শক্তিদ্বয়ের দ্বন্দ্বক্ষেত্র, মানুষকে তারা আহ্বান করেছিলেন শুভ দেবতার পক্ষে এই সৃষ্টিযুদ্ধে যোগ দেবার জন্য। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন—ব্রহ্মের কঠোর তপস্যা এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে জড় থেকে প্রাণ ও মনের দিকে, অশুভ থেকে শুভের দিকে, অপূর্ণ থেকে পূর্ণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে’ (পৃ.২৭)। কাজেই মনে রাখতে হবে, সৃষ্টি সব সময় উদ্দেশ্যমূলক, পরিণতিমূলক, ঐক্য ও সমন্বয় কেন্দ্রিক। কোনো কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়, নয় যাদৃচ্ছিক ও ইতর বিশেষ। টমাস হফওয়েবার নামে নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক “আইডেলিজম অ্যান্ড দ্য হারমনি অব থট অ্যান্ড রিয়্যালিটি” নামে এক অভিসন্দর্ভে দেখাচ্ছেন, ভাববাদ ‘সাধারণ’ মানসিক ঘটনা বা মন বাস্তব জগতকে প্রতিফলিত করে না বরং ব্যক্তি মনের ভেতরই ধরা দেয় বস্তু জগত। (মাইন্ড, ভলিউম, ১২৮, জুলাই, ২০১৯)। রবীন্দ্রনাথ সেটাই বলছেন, “তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান”। এই এনথ্রপসেন্টিক অবস্থান ছিল রবীন্দ্রদর্শনের মূল তাৎপর্য।
রবীন্দ্রনাথের কিশোর ভাবনার ভেতর সর্বপ্রথম মৃত্যুচিন্তার আভাস পাওয়া যায়, তবে সেটা অন্য ধরনের। প্রাচীন বৈষ্ণব পদাবলী পড়ে রবীন্দ্রনাথের চিন্তাজগতে একধরনের ভাবের তরঙ্গ খেলে যায়, বিদ্যাপতির মৈথিলী ভাষার পদ রচনা এবং ব্রজবুলি ভাষায় অন্যান্য পদকর্তাদের রচনা পড়ে তাঁর ইচ্ছে জেগেছিল একটা ছদ্মনামে তিনি লিখবেন। শুরু হলো প্রাচীন বৈষ্ণব কবিদের অনুকরণে নতুন পদ রচনা। নিজের নাম দিলেন ভানুসিংহ ঠাকুর। এর ফাঁকে তিনি প্রবোধচন্দ্র ঘোষকে একটা চিঠিতে জানান, “সমাজের লাইব্রেরীতে খুঁজিতে খুঁজিতে বহুকালের একটা জীর্ণ পুথি পাওয়া গিয়াছে, তাহা হইতে ভানুসিংহ নামক কোন প্রাচীন কবির পদ কপি করিয়া আনিয়াছি”। (চারুচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, রবিরশ্মি, ৬৯)। তবে একটা কথা না বললেই নয়, ভানুসিংহ নামে কবিতা রচনার পরে কবি কিছুতেই স্বস্তিতে থাকেননি। তিনি নিজেই সে কথা জানিয়েছেন, “তার পরের সোপানে ওঠা গেল পদাবলীর জালিয়াতিতে”। (১ম খণ্ড, ১৫৭)। তবে হাল আমলে আমরা যাকে কুম্ভিলকবৃত্তি বলছি ঠিক সেরকম না; ভাষার এক বিশেষ ধরনের সমসত্ত্বের আড়ালে ভাবটাকে নিজের মতো করে প্রকাশ করার ইচ্ছে তিনি সংবরণ করতে পারেননি। কিন্তু বৈষ্ণব পদাবলীর মাঝে কবির যে বিশেষ স্বাধীনতা নেই, সেটা তিনি বুঝেছিলেন একটু পরেই। তাই সম্ভবত তিনি এ ধরনের রচনা-প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। সেই বয়সে তিনি অক্ষয়চন্দ্র সরকারের মুখে শুনেছিলেন ইংরেজ বালক-কবি চ্যাটারটনের গল্প। চ্যাটারটন সেই অল্প বয়সেই প্রাচীন ইংরেজ কবিদের কবিতা লোকচক্ষুর অন্তরালে নকল করেছেন। পরবর্তীতে চ্যাটারটনের কিশোর বয়সে আত্মহনন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
রাধা ও কৃষ্ণের প্রেমের অপূর্ব লীলার ভেতর দিয়ে পরম সত্তার সাথে জীবাত্মার মিলনের যে অসাধারণ কাব্যিক আখ্যান রচিত হয়েছে সেটাকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছেন ‘মরণ’, ‘কো তুঁহু বোলবি মোয়!’—ইত্যাদি সংখ্যক চমৎকার কিছু কবিতা। ১৮৮৮ সালের শ্রাবণ মাসে ভারতী পত্রিকায় ‘মরণ’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই কবিতা পরবর্তীতে স্থান পায় সঞ্চয়িতার প্রথম কবিতা হিসেবে। শ্যাম-পরিত্যক্তা শ্রীমতি রাধিকার প্রেম-বিরহ থেকে তার ক্ষোভক্তি হচ্ছে এই কবিতার উপজীব্য। চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রবিরশ্মিতে কবিতাকে এভাবে বিশ্লেষণ করছেন—
হে মরণ, তোমারই নাম শ্যাম! মাধব আমাকে চিরকালের জন্য বিস্মৃত হইয়া পরিত্যাগ করিয়া গেল, কিন্তু তুমি আমার প্রতি কখনও বাম হইতে পারিবে না। রাধার হৃদয় আকুলতাতে জর্জরিত হইয়াছে, তাহার দুই নয়ন ঝর ঝর করিয়া অশ্রুপাত করিতেছে; তুমিই আমার মাধব, তুমিই আমার বন্ধু, তুমি আমার সন্তাপ মোচন করো। হে মরণ, তুমি এসো এসো। তুমি আমাকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করো, তাহা হইলে তোমার আলিঙ্গনবদ্ধ হইয়া সুখাবেশে আমার অক্ষিপল্লব মুদ্রিত হইয়া আসিবে এবং তোমার কলের ওপর রোদন করিতে করিতে আমার সর্বাঙ্গে চিরনিদ্রা ভরিয়া আসিবে। তুমি আমাকে কখনও বিস্মৃত হইবে না, তুমি আমাকে ত্যাগ করিবে না, কারণ মৃত্যু অবধারিত, সে কাহাকেও ত্যাগ করে না, অতএব তুমি আমাকে নিরাশ করিয়া রাধার হৃদয় ভাঙ্গিয়া দিবে না...।
মরণ কবিতার সবচেয়ে তাৎপর্যের বিষয় হচ্ছে, পদকর্তা ভানুসিংহ অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ নিজে কবিতার শেষে যা বলছেনঃ
ভানুসিংহ কহে—ছিয়ে ছিয়ে রাধা,
চঞ্চল হৃদয় তোহারি,
মাধব পঁহু মম, পিয় স মরণসে
অব তুঁহু দেখ বিচারি।
অর্থাৎ “ওগো রাধা, এমন কথা তুমি কেমন করিয়া বলিলে? ছি ছি! তোমার হৃদয় অতি তরল, আমার প্রভু মাধব মরণেরও অধিক প্রিয়তম, তিনি জীবন-মরণকে পরিব্যপ্ত করিয়াও অতিক্রম করিয়া রহিয়াছেন, ইহা তুমি এখন বিচার করিয়া বুঝিয়া দেখ”। এখানে একটা কথা পরিষ্কার, ভানুসিংহ ওরফে রবীন্দ্রনাথ শ্যাম বা পরমেশ্বরকে মৃত্যুর থেকেও শ্রেয় হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এটা রবীন্দ্রনাথের উপনিষদিক ভাবনার সারৎসার হিসেবে চিন্তা করতে কোনো অসুবিধা হয় না। শেক্সপিয়ার জুলিয়াস সিজারে লিখেছেন, “মৃত্যু সে-তো অবধারিত এক পরিণতি, যখন সে আসবে, আসবেই (Death, a necessary end, will come when it will come.)। কাজেই এর থেকে বিচ্যুত হওয়ার উপায় নেই। শেক্সপিয়ার তাঁর Cymbeline নাটকে মৃত্যুকে ঠিক একই ভাবে চিত্রিত করেছেন অপূর্ব ক্যানভাসেঃ
Fear no more the heat o’ the sun,
Nor the furious winter’s rages;
Thou thy worldly task hast done,
Home art gone, and ta’en thy wages:
Golden lads and girls all must,
As chimney-sweepers, come to dust.
রবীন্দ্র ভাবনায় মৃত্যু যেন একই সুরে বেজে উঠেছে শেক্সপিয়ারিয়ান ঢঙে। চিত্রা কাব্যের ‘মৃত্যুর পরে’ কবিতায় ধরা পড়লো একই সুর।
আজিকে হয়েছে শান্তি, জীবনের ভুলভ্রান্তি
সব গেছে চুকে।
রাত্রিদিন ধুকধুক তরঙ্গিত দুঃখ সুখ
থামিয়াছে বুকে।
যত-কিছু ভালোমন্দ যত-কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব
কিছু আর নাই
বলো শান্তি, বলো শান্তি, দেহ সাথে সব ক্লান্তি
হয়ে যাক ছাই।।
কবিতার মাঝে কবি প্রশ্ন করছেন, কেন এই আনাগোনা, কেন মিছে দেখাশোনা, দুদিনের তরে? এ প্রশ্ন তাঁর সব সময় ছিল যা শেষের দিকে এসে আরও দার্শনিক ভাবনায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, আমরা আলোচনার পরবর্তীতে সেটা দেখবো।
চলবে...
এসইউ/জিকেএস