ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

মায়াবতী: পর্ব ২৯

মোহিত কামাল | প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২২

কথাসাহিত্যিক মোহিত কামালের মায়াবতী বাংলা সাহিত্যে দ্বিতীয় মনোবৈজ্ঞানিক উপন্যাস। সাহিত্যের শব্দবিন্যাসে তিনি ব্যবহার করেছেন মনস্তত্ত্ব, সমাজের আড়ালের চিত্র। মা প্রত্যক্ষ করেছেন, মেয়েরা নানাভাবে উৎপীড়ন ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়, সহজে মুগ্ধ হয়ে অবিশ্বাস্য পাতানো ফাঁদে পা দেয়। মায়ের একান্ত চাওয়া মেয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তুলুক। বিধিনিষেধ আরোপ করেন মা। মেয়ে তখন মনে করে, মা স্বাধীনতা দিতে চায় না, বিশ্বাস করে না তাকে। মায়ের অবস্থানে মা ভাবছেন তিনি ঠিক। মেয়ের অবস্থানে মেয়ে ভাবছে, সে ঠিক। মায়ের ‘ঠিক’ এবং মেয়ের ‘ঠিক’র মাঝে সংঘাত বাধে। সংঘাত থেকে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়, ভুল করে বসে মেয়ে রিয়া। পালিয়ে যায় ঘর থেকে। এই ‘ভুল’ই হচ্ছে উপন্যাসের মূলধারা, মূলস্রোত। মায়াবতী পড়ে চিন্তনের বুননে ইতিবাচক গিঁট দেয়ার কৌশল শেখার আলোয় পাঠক-মন আলোকিত হবে। জানা যাবে টিনএজ সমস্যা মোকাবিলার কৌশল। জাগো নিউজের পাঠকের জন্য ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্ছে সাড়া জাগানো উপন্যাসটি—

সাতাশ.
যতই ব্যস্ত থাকুক ব্রেকফাস্ট না করে বাইরে যায় না রিয়া।
এখন ব্যস্ত ও। কলেজ ক্যাম্পাসে যেতে হবে। জরুরি মেসেজ পাঠিয়েছে মুনা। ব্রেকফাস্টে বসে তাই তাড়াহুড়ো করছে ও।
রিয়া বেশ ফিগার-সচেতন। ফিগার ঠিক রাখতে হলে পুষ্টির বিকল্প নেই। সকালের পেটভরা পুষ্টিকর নাস্তা কাজের উদ্যম বাড়ায়, কথাটা মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরেসুস্থে নাস্তা শেষ করল রিয়া। সাধারণত মিষ্টি এড়িয়ে চলে, মিষ্টি ফলও ছুঁয়ে দেখে না। অথচ টেবিলে সাজানো আছে রসমালাই, পাকা পেঁপে ও সাগরকলা।
শেফালিকে কতবার বলেছে এ ধরনের আইটেম সামনে না রাখতে। শেফালি মনে রাখেনি। ফল ও রসমালাইয়ের দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে টেবিল থেকে উঠে গেল রিয়া। সাগরকলার দিকে চোখ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন আবার নরম হয়ে গেল। গাছপাকা কলা। বাপির এক বন্ধু নরসিংদী থেকে এনেছেন। সাগরকলা ওর প্রিয়, জানে শেফালি। এজন্য টেবিলে সাজিয়ে দিয়েছে সে।
কলা তাৎক্ষণিক এনার্জি দেয়, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঘুমঘুম ভাব তৈরি করে। তাই কলা অ্যাভয়েড করার কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আয়রন পেতে হলে তাজা লেবু, জাম, আনারস আর লাল বর্ণের ফলের জুস খাওয়া ভালো; কিন্তু অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত মিষ্টি ফল কম খেতে বলেছেন তিনি। তবে বলেছেন এ ধরনের ফল ব্রেনে রক্ত চলাচল সচল রাখে। মন সজীব রাখে। মনের সজীবতা খুব দরকার। দেহের ফিটনেস আর মনের ফিটনেসের কোনো বিকল্প নেই। রাগ সামাল দেওয়ার জন্য উভয় ফিটনেসই গুরুত্বপূর্ণ। ভাবতে ভাবতে রিয়া ডাক দেয়, বুয়া।
উত্তর নেই। শেফালি সাধারণত কিচেন থেকে ছুটে আসে। এখন আসছে না। জবাবও দিচ্ছে না।
আবার ডাকল ও।

এবার রাহেলা চৌধুরি বেরিয়ে এলেন শোবার ঘর থেকে।
কী, মা? বুয়াকে ডেকেছ?
হ্যাঁ।
কিচেনে উঁকি দিলেন তিনি। কিচেনে নেই বুয়া।
মনে হয় শেফালি বাথরুমে ঢুকেছে। কিছু লাগবে? এত সকালে ব্রেকফাস্ট করছ যে?
জরুরি কাজ আছে। সকাল সকাল বের হব। তাই ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম।
ওঃ! কখন আসবে। লাঞ্চ তো বাসায়ই করবে, না?
হ্যাঁ। বাসায় লাঞ্চ করব। তুমি লাঞ্চ আইটেমের দিকে খেয়াল রেখো। ঝলসানো, ভাজা খাবার টেবিলে রেখো না। লো ফ্যাট ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার তোমাদের জন্যও দরকার। আমার জন্য তো অবশ্যই।
কোনো ফিশ আইটেম থাকবে?
হ্যাঁ। বেকড ফিশ বা মাছের স্যান্ডউইচ রাখতে পারো। কথা শেষ করে নিজের ঘরে ঢোকে রিয়া।

রাতে ভালো ঘুম হয়নি। ফ্রেশ লাগছে না। ঝরঝরা লাগছে না। আজ কলেজে রেজাল্ট চলে আসার কথা। রেজাল্ট অনলাইনেও পাওয়া যাবে। রেজাল্ট শীটে প্রধানমন্ত্রী সাইন করার পর অনলাইনে ছাড়বে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে নিজের রেজাল্টের ব্যাপারে আশাবাদী ও। তবু চিন্তাজট থেকে মুক্ত হতে পারছে না। পরীক্ষা শেষ করার পর একদম চিন্তা আসেনি। দু-একদিন ধরে চিন্তা বেড়েছে।
ঘরে এসে নিজেকে রিচার্জ করে নিতে থাকে রিয়া। তিন সেকেন্ড ধরে লম্বা শ্বাস নেয়, তারপর তিন সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছাড়ে। দশ মিনিট এভাবে চর্চা করে।
গতরাতে ঘুম না হওয়ার কারণে ক্লান্তিও বোধ করছে ও।
রিচার্জিংয়ের পর ক্লান্তি কমেছে, একদম যায়নি। ক্লান্তি দূর করার জন্য আঙুলের ডগা দিয়ে সারা মাথা, ঘাড়, কপালে হালকা ম্যাসাজ দিলো নিজে। সেলফ ম্যাসাজে চুলে আঙুল চালিয়েও হালকা করে কয়েকবার টানল। গোলাকারে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চোখেরও ব্যায়াম করে নিলো রিয়া। নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখে শেফালি টেবিল গোছাচ্ছে।
এক গ্লাস পাইনঅ্যাপেল জুস বানিয়ে দাও, বুয়া। অর্ডার দিলো ও।

একটু পরে জুস নিয়ে এলো শেফালি।
তৃপ্তি নিয়ে জুস পান করল রিয়া। জুস খাওয়ার পর বেশ ফ্রেশ লাগতে থাকে।
রিচার্জিং কিংবা সেলফ ম্যাসাজের কৌশলগুলো ভরাপেটে চর্চা করা উচিত না। জানাসত্ত্বেও নিয়ম পালন করেনি রিয়া। তাই যতটুকু স্বস্তি পাওয়ার ততটুকু পায়নি। তবুও সন্তুষ্ট। আপাতত তৃপ্ত। তৃপ্তি নিয়ে ক্যাজুয়াল ড্রেস পরে বাইরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল ও।
এ সময় ইমরুল চৌধুরি সামনে এসে দাঁড়ালেন।
রিয়া একবার বাপির মুখের দিকে তাকাল। তাঁকে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে বাপির সামনে এসে বসে পড়ে। কদমবুসি করে উঠে দাঁড়ায়।
ইমরুল চৌধুরি সব খবর রাখেন। আজ রিয়া রেজাল্ট আনতে যাচ্ছে। এজন্যই বাবার আশীর্বাদ নিচ্ছে, বুঝতে পারলেন।
হোপ ফর দা বেস্ট, ফর দা গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ। কী বলো, মামণি?
রিয়া হাসল। কোনো জবাব না দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল ও। ফিরে এলো আবার। লো ভলিউমে বলল, বাপি আজ রেজাল্ট প্রকাশের কথা এখন মামণিকে জানিয়ো না। জানালে খবর না-পাওয়া পর্যন্ত অযথা দুশ্চিন্তা করবে।
আচ্ছা। জানাব না। তুমি সেলফোনে জানিয়ে দিয়ো আমাকে।
বাপির মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে ঘুরে বাইরের দিকে দ্রুত পা বাড়াল ও।

ইদানীং রিয়া সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করে। সাধারণত লিফ্ট ব্যবহার করে না। ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি বাড়ানোর জন্যই এমনটা করে।
সিঁড়ির সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে থমকে দাঁড়াল ও।
কুসুমকলির বাপি, কায়সার জামান সিঁড়ি বেয়ে ওপর থেকে নেমে আসছেন।
রিয়া বিনীত ভঙ্গিতে পাশে সরে গিয়ে সালাম দিলো।
জামান আঙ্কেল হাসিমুখে প্রশ্ন করলেন, কেমন আছো, মামণি?
ভালো। আঙ্কেল, আপনি ভালো?
হুঁ। ভালো।
কুসুম কবে আসবে, আঙ্কেল?
আজ বোধ হয় খুলনা থেকে রওনা দেবে। পরীক্ষার পরপরই যাওয়ার কথা ছিল। গেছে দেরিতে। আসছে তাড়াতাড়ি। গতকাল ওর ছোট মামার এনগেজমেন্ট হয়েছে। নানা বাড়ির উৎসবেও ওর মন টেকে না।
ওঃ! মনে হয়, কোচিং মিস হচ্ছে। এজন্য তাড়াহুড়ো করছে। জামান সাহেব বললেন, হতে পারে। তোমরা কি একই কোচিং করছ?
জি আঙ্কেল। এক কোচিং সেন্টারে যাচ্ছি আমরা।
ভালো। বেশ ভালো। ওর তো মেডিক্যালে পড়ার শখ। ডাক্তার হতে চায়। তুমিও তো মেডিক্যাল কোচিং করছ। ভালো। খুব ভালো।
কায়সার জামান কথা থামিয়ে আবার প্রশ্ন করলেন, সিঁড়ি দিয়ে নামবে?
জি আঙ্কেল।
ভেরি গুড। আই অ্যাপ্রিশিয়েট ইউ। দেখো, এ বয়সে আমিও লিফ্ট ব্যবহার করি না। ফিটনেসের জন্য ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটির বিকল্প নেই। একই সঙ্গে ফলমূল বেশি খেতে হবে। শাকসবজি খেতে হবে। ক্ষুধা লাগার আগেই খাবার খেয়ে নিতে হবে। ক্ষুধা মেটার আগেই খাওয়া শেষ করতে হবে। তবেই ফিটনেস ঠিক থাকবে।

তারা নামছেন, পাশাপাশি নেমে আসছেন নিচে।
কায়সার জামান নিজে থেকেই কথা বলে যাচ্ছেন, মনে হয় কুসুম রেজাল্ট নিয়ে চিন্তিত। বেশ অস্থির মনে হয়েছে ওকে। তোমার কি ধারণা?
জি আঙ্কেল। আমরা সবাই কিছুটা চিন্তিত।
আরে না। চিন্তার কিছু নেই। তোমাদের পুরো গ্রুপই গোল্ডেন রেজাল্ট পাবে। প্রত্যয়ের সঙ্গেই বললেন কায়সার জামান।
দোয়া করবেন আঙ্কেল।
কথা বলতে বলতে ওরা নিচে নেমে এলো।
কুসুমের বাপির জন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে লবিতে।
রিয়ার গাড়ি নেই। রিয়াকে দেখে ড্রাইভার খুঁজতে শুরু করে গার্ড। সাধারণত নিচে নামার আগে ইন্টারকমে জানিয়ে আসে। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে ফ্রন্ট লবিতে প্রস্তুত থাকে। আজ ড্রাইভার প্রস্তুত নেই। তাকে জানানো হয়নি। গার্ড তাকে খুঁজছে।
কায়সার জামান বললেন, কোথায় যাবে মামণি?
বেইলি রোডে। কলেজে যাব।
কলেজে? কেন?
আঙ্কেল আজ বোধ হয় কলেজে রেজাল্ট চলে আসবে। এখনো নিশ্চিত না।
ওঃ! কুসুম জানে?
জানে। এজন্য বোধ হয় আজ চলে আসবে সে।
রেজাল্টের কথা আগে বললে না যে?
লজ্জা পায় রিয়া। কোনো জবাব দিতে পারল না। আসলে রেজাল্ট না-জানার আগে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে চায়নি ও।
চলো। আমি তো মতিঝিলে যাব। তোমাকে নামিয়ে দিয়ে যাই। আমার গাড়িতে ওঠো। তোমার ড্রাইভারকে ক্যাম্পাসে যেতে বলে দাও।
না করতে পারল না রিয়া। এ মুহূর্তে আঙ্কেলের সঙ্গে যেতে ইচ্ছা করছে না। তবুও যেতে হবে। ড্রাইভারটাও আর সময় পায়নি বাইরে যাওয়ার। মনের রাগ মনেই চেপে রাখল ও। ইচ্ছার বিরুদ্ধে হাসি ফুটিয়ে রাখল মুখে।
অনিচ্ছায় গাড়িতে উঠে বসল রিয়া। গার্ডকে উদ্দেশ করে বলল, ড্রাইভারকে কলেজে যেতে বলবেন।
গার্ড জবাব দেয়, আইচ্ছা।
এ মুহূর্তে ‘আইচ্ছা’ শব্দটা মেজাজ আরও খিঁচড়ে দিলো। খিঁচড়ানো ভাব প্রকাশ না-করে চুপ মেরে রইল। মনে এক অনুভূতি, বাইরে আরেক প্রকাশ। কঠিন যন্ত্রণা নিয়ে আঙ্কেলের সঙ্গে আলাপ চালাতে লাগল। কথার জবাব দিতে থাকে।
শুনলাম, মুনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
জি।
ছেলে কী করে?
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। যুক্তরাষ্ট্রে সানদিয়াগোতে পিএইচডি করছে।
বাঃ! বেশ ভালো।
ছেলে দেখতে কেমন?
খুউব ভালো, আঙ্কেল। দারুণ হ্যান্ডসাম! রিয়ার গলায় হঠাৎ উচ্ছ্বাস চলে আসে। উচ্ছ্বাস সামাল দিতে পারল না ও। ‘হ্যান্ডসাম’ শব্দটা বলে ফেলে কিছুটা লজ্জাবোধ করায় নত হয়ে গেল মাথা।
ছেলের বাড়ি কোথায়?
গ্রামের বাড়ি নরসিংদী, ঢাকায় সেটেল্ড। উত্তরায় ওদের নিজস্ব বাড়ি আছে। রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের পেছনে।
গুড। ভেরি গুড।
তো, এত কম বয়সে ওকে বিয়ে দিচ্ছে কেন?
এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারল না রিয়া। চুপ করে থাকল কিছুক্ষণ। একটু পর বলল, একটার পর একটা প্রপোজাল আসছে। ওরা প্রপোজালের জোয়ার সামাল দিতে পারছে না বোধ হয়। হাসান আহমেদ আঙ্কেল, মানে মুনার আব্বু রাজি হয়ে গেলেন। আত্মীয়-স্বজন একপায়ে খাড়া। এ ছেলেকে হাতছাড়া করতে চাইছেন না তাঁরা।
মুনার পড়ালেখার সুযোগ থাকবে তো? বিয়ের পর ওকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাধা দেবে না তো?
না না। আঙ্কেল। এই কথা ক্লিয়ার করে নিয়েছে মুনা। শর্ত দিয়েছে একটা, ওকে পড়ার সুযোগ দিতে হবে।
হবু শ্বশুর-শাশুড়ি রাজি হয়েছে?
হ্যাঁ। হয়েছেন।
হলেই ভালো। সাধারণত রাজি হতে চায় না শ্বশুরবাড়ির স্বজনেরা।

রিয়া এবার থেমে থাকে। হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। ভেবেছিল, কথা থেমে গেছে। গাড়ির উইন্ডশিল্ড দিয়ে বাইরে তাকাল ও। এখন অবস্থান করছে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে। রাস্তায় ভিড় বেড়ে গেছে। গাড়ি গতি পাচ্ছে না। গাড়ির গতির সঙ্গে মিলছে না মনের গতি। মন চায় দ্রুত বেইলি রোডে পৌঁছে যেতে। ‘পাঠক সমাবেশ’র বাইরের দিকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে অনেক বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন। প্রথমে আছে একটি ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রকাশনা, আনন্দ আলো। আনন্দ আলোর উজ্জ্বল কাভারে শোভা পাচ্ছে মডেল তিশার বউমুখ, বিয়ে স্পেশাল। পাশেই শোভা পাচ্ছে ক্যানভাস, একটি পারসোনা প্রকাশনা। অফহোয়াইট এবং ঘিয়ে রঙের গর্জিয়াস শাড়ি পরনে অসাধারণ সেক্সিলুকের নাম-না-জানা এক মডেল বসে আছে বধূবেশে। কাভারে লেখা আছে ‘বিয়ে সংখ্যা’। কালো প্রচ্ছদ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসে আকর্ষণীয় ঢঙে বসে আছে নতুন বউ। চারপাশে বউপ্রসঙ্গ। বউ সাজার ধুম পড়েছে। রিয়া চোখ দিয়ে দেখছে সব। মন দিয়ে লুফে নিতে পারছে না দেখার মজা। আঙ্কেলও বউ নিয়ে কথা বলছেন।

কায়সার জামান আবার মুখ খোলেন।
কুসুমকে নিয়েও বেশ ঝামেলায় আছি। ওরও প্রপোজাল আসছে একের পর এক। কী যে করি। কুসুম তো বিয়ের কথা শুনতেই পারে না।

চলবে...

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন