মো. আরিফুল হাসানের সাতটি কবিতা
এমন দিনে
এমন দিনে, এমন কোনো দিনে
হয়তো আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম
এমন দিনে, এমন কোনো দিনে
হয়তো আমায় ফিরিয়ে এনেছিলে।
ঘাসের পাখায় রঙিন হলে রাত
আমার দু’চোখ অন্ধ হয়েছিল
তারার সাথে চাঁদের মোলাকাত
সবগুলো পথ বন্ধ হয়েছিল।
আমায় তুমি নিজের হাতে শেষে
পথ চেনালে, ফেরালে নিজ দেশে।
****
কীভাবে কবিতা হয়
একটা নীরবতার ভেতর ঢুকে যাই
একটা অন্ধকারের ভেতর লীন হই
বুকের ভেতর বরফ জমতে থাকে
ধীরে ধীরে ফসিল হয়ে যায় এ দেহ।
প্রত্নতত্ত্বের পরিপৃষ্ঠা খুলে প্রজন্মরা
খুঁজে নেয় একটি কবিতার শবদেহ।
****
অন্ধকার নেমে এলে অতঃপর
পালকের জ্বর জেঁকে বসে ডালের অসুখে
রাত্রির ঘনপ্রহর নষ্ট হতে থাকে
দূরে কোথাও উগ্র সংগীত বাজে, ভাঙা চাঁদ
মুখ ঢেকে কেঁদে যায় মেঘের আড়ালে।
অতঃপর, মানুষের স্বপ্নের ভেতর
জেগে উঠলে প্রথম সকাল, পক্ষী উড়ে যায়।
****
রাতের ভাষা যে নীরব
সে ভাষা বিলাপের
তুমি তাকে প্রশ্ন করতে পারো
অথবা সে থাকে তোমার উত্তরের মুখোমুখি
তুমি তাকে চিনতে পারলেও চেনো না।
যখন সংগীত ছিল
মানুষের মন ছিল কাদা
একটি শৈল্পিক রূপায়নে
বদলে নিলো নিজেদের খোলস, পশুপরিধি।
****
হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে
তোমার চিবুকটা সুন্দর
ওহ রূপসী, সে গালের তিল হলাম না।
তোমার চুলের খোঁপায়
অসংখ্য মহাকাল আটকে থাকে নীরবে
ওহ প্রেয়সী, সে চুলের কাঁটা হলাম না।
****
শোকের গোপন থেকে
জনপদ ও কুয়াশা একত্রিত হয়ে গেলে
সামান্য চোখের চশমা ঝাপসা দেখা গেলে
জানালার পর্দায় নাচে বিষ-ঠেকা বিম্বিষা।
তারাদের দেশে নোনতা স্বাদ ঝরে গেলে
একটি পলকেই স্বর্গ নেচে গেলে হৃদযন্ত্রে
আপেক্ষিক উষ্ণতা নিয়ে আসে শীত-সুখ।
তাহলে কি বলিষ্ঠ ব্যাকরণে আপাত দুঃখ
কেঁদেকেটে ঘুম ক্ষয় করবে মানুষের মন?
****
এক অরণ্যের ভেতর
বন্ধক রেখেছি মুক্তোধন
সমস্ত সমর্পণ
নতজানু প্রার্থনার রাত
ভোরের কেরাত
সব দিয়ে দিয়েছি।
সবুজ স্বপ্নের খামে
ফিরতি ডাকে এসেছে
আত্মবিম্বের ছায়াঘাত।
এসইউ/জিকেএস