আদিল মাহমুদের পাঁচটি কবিতা
পরশ
মৃত্যুমুখে তোমাকে ভাবলে জ্বলে ওঠে জীবন প্রদীপ
বুকের ভেতর ঘণ্টি বাজে—
শ্বাস-প্রশ্বাস নড়ে ওঠে, করে ঢিপ ঢিপ ঢিপ...
ধ্রুপদী মরণ দেশে তুমি জীয়নকাঠি
তোমার পরশ পেলেই নতুন জীবনে জেগে উঠি।
****
বোকা ছেলে
ছেলেটা বড় বোকা—প্রেম করে মরলো!
হাতের কাছে অনেক বিষ ছিল
একটু খেলেই পারতো।
ছেলেটা বড় সরল—কেন যে প্রেম করে মরলো!
ফাঁসির দড়ি তো ঘরে ছিল
একটু ঝুললেই পারতো।
****
পাপ
মাঝে মাঝে রাত হলে
আমার খাটের পাশের টেবিলে
একটি পুরোনো পাপ এসে বসে
ভয়ংকর সুরে গান শুনিয়ে বলে—
‘নুহের মত জীবন পেলেও
মরতে তোমায় হবে।’
আমার চারপাশে কেউ থাকে না
শুধু ওই পাপ ছাড়া।
সিগারেট হাতে আমার দিকে তাকিয়ে
পুরোনো পাপ হাসতে থাকে।
যেমন ধারালো দা—রক্ত মেখে হাসে!
****
পাতা ঝরার গান
পাতা ঝরার গানে অস্থির লাগে না আর
এখন জানি, বুঝি
আমি কারোর না—ছিলামও না।
এদিক-ওদিক ছন্দের গন্ধে
এখন কেবল প্রকৃতি দেখি।
বৃষ্টি ও শিশিরের ফোটা
কবিতা লগ্ন ও পদ্য রাশিতে
গুটিয়ে নিয়েছি নিজের সমস্তটুকু।
কেউ মনে রাখেনি—রাখেও না
কবরের এপারেও না, ওপারে তো না-ই।
****
মিছে মিছে হলেও ভালোবাসুক
তৃষ্ণার ব্যাকুলতায় স্পর্শ করুক। অনুভব করুক রক্তের প্রতিটি ফোটায়। মনে রাখুক ভাস্করের নিপুণ ছায়ায়। ডুবে থাকুক অলীকের গভীর মায়ায়। অপেক্ষা করুক হৃদয়ের খোলা জানালায়। হাতের গোলাপ শুকায়ে মরুক ভীষণ মৃত্যু যন্ত্রণায়। কাছে না পাওয়ার আক্ষেপে লাগাতর বিনিদ্র রাত কাটুক। বুকের বাম পাশে তীব্র কষ্ট হোক। অভিমান দেখিয়ে ভালোবাসা ভুলে থাকার চেষ্টা করুক।
কেউ আমাকে মিছে মিছে হলেও ভালোবাসুক।
এসইউ/এমকেএইচ