এখন সময় যুদ্ধের, প্রতিরোধের ও অন্যান্য কবিতা
আবু আফজাল সালেহ
রংধনু ও তুমি
আকাশে মেঘ ওড়ে—
অপেক্ষা করছি, দু’ফোঁটা বৃষ্টির জন্য
রংধনুর জন্য।
মেঘ ঝরিয়ে আসুক—
দু’ফোঁটা বৃষ্টি
একটি রংধনু।
দয়িতা, তুমি আর বাদ থাকবে কেন?
—তুমিও এসো
মেঘ হয়ে উড়ে যায়—
তারপর না হয় বৃষ্টি হয়ে রংধনু হয়ে যায়।
****
এখন সময় যুদ্ধের, প্রতিরোধের
এখন সময় যুদ্ধের, প্রতিরোধের
এখন গোলাপের পরিবর্তে হাতে শোভা পাক মেশিনগান, কলম
প্রেমিকার ঠোঁটের জায়গায় কার্তুজ
অবহেলায় প্রতিরোধ
শোষণে ঘৃণা।
ফিলিস্তিন জ্বলছে সেই কবে থেকেই
বৈরুত মশুল বাগদাদ অগ্নিকুণ্ড
নৈশব্দে মানবতার দেয়াল ভেঙে গেছে
বিবেক উবে গেছে অনেক আগেই
গণতন্ত্রের নামে ভাওতাবাজি, দেখানো বুলি
বোমার গন্ধ, অস্ত্রের ঝনঝনানিতে কম্পিত প্রিয় ভূমি
তাই সমস্ত পৃথিবীই এখন যুদ্ধক্ষেত্র।
আমরা এখন যোদ্ধা নিজের ভূমি পাবার জন্য
হাপিত্যেশ করছি গণতন্ত্রের জন্য
লড়াই স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে
লড়াই অসত্যের বিরুদ্ধে
লড়াই নিজের বাস্তুভিটা ফিরে পাবার জন্য।
আঁচ বেড়ে টগবগে রক্ত এখন দাউ দাউ করে জ্বলছে
নিশপিশ করছে হাতগুলো—
লুণ্ঠনকারী ও হরণকারীর গালে থাপ্পড় দেওয়ার জন্য
গাজাবাসীর চোখের মতো চোখ দিয়ে অগ্নিনিক্ষেপ হচ্ছে
জ্বলন্ত ভিসুভিয়াসের অগ্নিমুখের লাভা বের হচ্ছে কলমের নিব দিয়ে।
হ্যালোসিনেশনে ভুগছি এখন—
সবাই যেন শত্রুমুখ!
এখন কী করব আমি!
প্রেমিকা, তুমি সরে দাঁড়াও
আমার চোখে ভাসে এখন পোড়াস্বদেশ
তোমার ঠোঁটের চেয়ে কার্তুজের উষ্ণতা বেশি প্রয়োজন
তোমার হাতের পরিবর্তে মেশিনগান কম হালকা
বেহায়া-বিবেক, নির্লজ্জ-মানবতার মুক্তির জন্য কালি বেশি দরকারি।
এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময়
এখন সাপলুডু খেলার প্রতি বিদ্বেষ
ফেরিওয়ালাদের প্রতি করুণা দেখানোর সময় এখন
গুড়িয়ে দিতে হবে মেকি
এই যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা সবাই সৈনিক—
কেউ আমাদের, কেউ শত্রুপক্ষের।
****
পাকা গমক্ষেতের সৌন্দর্য
নীলিমায় শাদামেঘের মিনার
আকাশপারে পারাবত ওড়ে
সোনাবালুতীরে ঝাউবন—সবুজ ঢেউ
নীল নোনাজলের গর্জন, পাড় ভাঙে
অতল-রহস্যে সুউচ্চ নারিকেলবীথির উচ্ছ্বাস।
এমন সেন্টমার্টিনে এক কবিতা দাঁড়িয়ে
তার ছেড়ে দেওয়া আঁচল—
পাঁকা গমক্ষেতের দুলে ওঠা ঢেউয়ের সৌন্দর্য ওড়ে।
এসইউ/জিকেএস