হাবীবাহ্ নাসরীন- এর ৩টি কবিতা
তোমার কথা ভাবতে গিয়ে
তোমার কথা ভাবতে গিয়ে হাত কেটেছে।
হলদেটে এক লেবুর খোসা লাল হয়েছে!
এইটুকুতেই চমকে গেলে, বলছি শোনো,
অনেক আগেই এই হৃদয়ের রক্তক্ষরণ
বুঝিয়ে গেছে তুমি এবং তোমার ধরন।
সেই থেকে মন কাঙাল হয়ে দিন গুনেছে।
কাঁচের মতন দেয়াল তুলে কই হারালে
কাঁদতে দেখি, যায় না ছোঁয়া চোখের সে জল
যায় না বোঝা ওইপাশে ঠিক কী কোলাহল,
ওই দুটি চোখ কার চোখেতে চোখ রেখেছে!
ভুল বুঝো না, আমার ভীষণ গোয়েন্দা মন
তোমার জন্য বসন-ভূষণ পাল্টে গেছে!
কাঙালরূপী হৃদয় নিয়ে ফেউ লেগেছি
তোমার চোখে কেউ না ডুবুক, আমিই মরি!
মুখপোড়া চাঁদ কেমন করে হাসছে দ্যাখো
তোমার কথা ভাবতে গিয়ে রাত নেমেছে!
সামনে তাকাও শূন্য দৃষ্টি খুলে
পেছনে কী আছে! খুব বেশি কিছু নেই,
হয়তো জমানো নোনাজল কিছু আর
দীর্ঘশ্বাসের বাড়িঘর সেখানেই
কিছু ব্যথাতুর অনাদায়ী অধিকার।
পেছনে কী আছে! নীল নীল কিছু সুখ
আবেগের তাপে উথলানো অভিমান
ভুলে ভুলে যাওয়া কিছু পরিচিত মুখ
কিছু স্বপ্নের আচমকা অবসান।
পেছনে কী আছে! ঘৃণা আর বিদ্বেষ
দুঃখের মতো হলদেটে কোন খাম?
না লেখা গল্প, কিছু শুরুহীন শেষ,
কখনো না বলা, চেপে যাওয়া কিছু নাম।
সামনে তাকাও শূন্য দৃষ্টি খুলে।
মরবার আগে বাঁচার জন্য লড়ো,
টিকে থাকবার ভাঙা এই মাস্তুলে।
বয়ে বেড়াবার একটা কিছু তো করো!
বলবো কাকে
বলবো কাকে, আমার চোখে দুঃখের নদী দ্যাখো
হাঁটতে গিয়ে পথ ফুরোলে হাতটি ধরে রেখো।
না দিও না যেতে আমায়, চোখের কোলে বসাও
আকাশ ভরা কষ্ট তারা যা পারো সব খসাও।
এক বিকেলের বিষণ্নতা বুকের কোণে চেপে
অনন্ত রাত একলা জাগি, রাতের দৈর্ঘ্য মেপে।
বলবো কাকে, রাতটা আমার সকাল করে আনো
অনেকটা পথ একলা এলাম, এবার কাছে টানো।
অভিমানের বুনন খুলে সব ভুলিয়ে দাও
পাওয়ার ব্যথা, দেয়ার ব্যথা, চাওয়ার বেদনাও।
বলবো কাকে, উড়ছে আঁচল হাত বাড়িয়ে ধরো
কাদামাটির পুতুল হবো, পারলে আমায় গড়ো!
এইচআর/আরআইপি