শৈশব স্মৃতিতে ফেরাবে আজাদুল হকের বই
যা দেখেছেন, তাই স্মৃতির পটে ঠাঁই দিয়ে সাহিত্য রূপ দিয়েছেন। শৈশবের কথা, কৈশোরের কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা সবই উঠে এসেছে তার স্মৃতিচারণে। সাবলীল, মার্জিত অথচ জীবনঘন নানা আলাপন বইটির পরতে পরতে। বইটিতে চোখ রাখলেই যে কেউ ফিরে যেতে চাইবে শৈশব স্মৃতির গহীন থেকে গহীনে।
‘আমার শৈশব-আমার কৈশোর : আমার দেখা মুক্তিযুদ্ধ’ বইটির সাহিত্যমান এবং বাস্তবতার নিরিখে মূল্যায়ন করতে গিয়ে আলোচকরাও তাই মনে করিয়ে দিলেন।
আমেরিকা প্রবাসী লেখক আজাদুল হকের প্রথম বই ‘আমার শৈশব-আমার কৈশোর : আমার দেখা মুক্তিযুদ্ধ’। রোববার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
লেখক, সাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু।
আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বইটির ওপর মূল আলোচনা রাখেন জ্ঞান ও সৃজনশীন প্রকাশনা সমিতির সাবেক সভাপতি মাযহারুল ইসলাম। আলোচনায় আরও অংশ নেন অরুণ কুমার বিশ্বাস ও সরকার ফারহানা আক্তার সুমি।
প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, লেখক আজাদুল হক মূলত সাহিত্যের মানুষ নন। তবে তিনি যেভাবে তার স্মৃতিকথা লেখনির মাধ্যমে তুলে নিয়ে এসেছেন, এটি অসাধারণ চেষ্টা। যা দেখেছেন, তাই লিখেছেন। এটি অনেক লেখকই পারেন না। একটি ঘটনার সাহিত্যমান অক্ষুণ্ন রেখে বর্ণনা করা অনেক কঠিন কাজ। লেখক সেই কঠিন কাজটিই অনেক সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন।
লেখক আজাদুল হকের বন্ধু ও বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেন, বন্ধু আজাদুল হক প্রযুক্তির মানুষ। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শত ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে সাহিত্য চর্চা করা সত্যিই অসাধ্য সাধন করা। শৈশব কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা বাংলা ভাষায় যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা অন্যদেরকেও অনুপ্রাণিত করবে।
নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একটি মহাকাব্য। ওই সময় যে যা দেখেছেন, তাই বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে উঠে আসছে। ‘আমার শৈশব-আমার কৈশোর : আমার দেখা মুক্তিযুদ্ধ’ বইটিতেও মুক্তিযুদ্ধের লেখক নির্মোহভাবে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও সহজ ভাষায় লেখার গাঁথুনি দিয়ে পাঠককে শৈশবে ফিরিয়ে নেবে লেখক।
অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে ‘লাইভ টু ওয়েব’। এছাড়া আগত অতিথিদের সাক্ষাৎকারও সম্প্রচার করা হয়।
লেখক আজাদুল হক আমেরিকার টেক্সাস রাজ্যের হিউস্টন শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তিনি একজন তড়িৎ প্রকৌশলী। আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম এনার্জি কোম্পানির একটি আইটি ডিপার্টমেন্ট পরিচালনা করেন। তিনি নাসাতেও কাজ করেছেন।
টেকনোলজি নিয়ে কাজ করলেও তার মন পড়ে থাকে সাহিত্য, কবিতা আর লেখালেখিতে। এছাড়া শখ হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইন, থ্রি-ডি অ্যানিমেশন এবং ডকুমেন্টরি নির্মাণ করেন। সময়-সুযোগ পেলে ছবিও তোলেন। তার বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু।
এএসএস/বিএ/এমএস