সানাউল্লাহ সাগরের তিনটি কবিতা
আগুনের ঘ্রাণ
করুণা নিয়েই তুমি চলে যাবে দূরে
এটাও চুরির মতো একটা প্রবাহ।
ইচ্ছে হলে চলে যেতে পারো আর নুয়ে
আবাদ করতে পারো জীবন। হত্যার
মতো প্রতিহত হয়ে যাও; ঈর্ষা এবং
খবর। তোমার ছিলা স্পর্শ করে করে
দরাজ দরজায় লাল হয়ে ফুটে যাবে
ঘনায়ণ দৃশ্যে, আরো গাঢ় হও তবে।
মিয়ানমার, কী চাও? ক্ষত আর লালে!
আমাদের থিতু গোলা পারাপার রেখে
আবরণহীন হয়ে যাচ্ছে। দেখো ফের;
আকাশ সমান হচ্ছে গদ্য-পর্ণ- বোধ।
এবার থামাও রঙ; তীব্র হয়ে যাচ্ছে
থরথর। দেখো জ্বলে যাচ্ছে দৃঢ় নাফ।
বলাকা
দ্যাখ তো কতোটা নুয়ে পড়ে আছি তোর
ফিরে দেখা পথে। সাথে কিছু নেই আর
অথচ বাবুই বলে চিৎকার করি;
কেঁদে যাই বাবুইয়ে, রঙের খেলায়।
দরজা খোলাই আছে, দেখবি যেদিন
চুরি গেছি ধুলিপথে; নেমে গেছি গালে
কোথায় কাঁদবি আর বুক ফেরি করে,
ভয়ে ভয়ে জ্বলে যাবি কাঁচের ভেলায়।
দেখিস বেহালা জ্বলে গেলে ফিরে যাবো
নাচের বেহাগে আর ঘাসের নিদ্রায়
মেখে দিবো যন্ত্রময়। ডাল থেকে গাছে,
পিছে পিছে পুড়ে গেছি অকাল আভায়।
নুয়ে পড়া ঠোঁটে ঈর্ষা নয় শুধু ভয়
আমার কাফনে শখ; আরো দূরে গেছে!
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও রানাঘাট ব্রত
এবার বর্ষায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে নেমে যাওয়ার পর মনে হলো—আমিও যেন কোথায় রোপিত হয়ে আছি। সেখানে ভয়ের আরম্ভ থেকে সাহসের অন্তর্বাস পর্যন্ত গোলাপ ঘামে। ছায়ার আড়ালে রুইয়ে যাওয়া আমি মাটির দহনে-পীড়নে বাড়তে থাকি। ছড়িয়ে যেতে থাকি ভৃত্য ও মনিবের ছায়াবাজিতে।
দহনের কহনে ফুল ফোটে! আমি আরো বিগলিত হই। ক্রমেই মনে হয়, আমারো ডাল-পালা ছড়াচ্ছে। কথার অকালে তাদের গভীরতা প্রলম্বিত হয় আরো। নাতিশীতোষ্ণ ইচ্ছে নিয়ে আমি গঠিত হতে থাকি সড়কে-বন্দরে। আর ফোঁপানো টিপটিপ রোপিত বৃক্ষের শাখা-প্রশাখায় স্নেহ ছড়াতে থাকে। আমার তৃষ্ণায় সুবহেসাদিক এলে তুমুল রতিক্ষত নিয়ে ব্রতগ্রহণের মুখোমুখি হই। মাটির অভ্যন্তরেই ছড়াতে থাকি।
ফের বর্ষারা হাসে। টিপটিপ রমণীয় হয়। বৃক্ষরোপণ তৃষ্ণা ঘণিভূত হলে বুঝতে পারি তারা আবার—রানাঘাটেই রোপিত হতে যাচ্ছে।
এইচআর/এমএস