আমার অচেনা চেনা শহর
আজ ভোরে ঘুম ভেঙেছে বিজয়ের গান শুনে
ওরা জানতে পারেনি আমি এসেছি।
ঘর থেকে বেরিয়েছি ধীরে ধীরে, পথ চেনা নয়
আমি জানি এ পথ আমাকে চেনে না।
ম্যারাদিয়ার নুরুল হক নিয়ে এসেছে
লালশাক, এ সময়ের নতুন আলু আর শিম
ও ভিন্ন ক্রেতার সাথে ব্যস্ত।
ত্রিমোহিনীর সুজা বেচতে চাইলো
শীতের ধনেপাতা, ক্ষেতের নতুন লাউ।
আমি হেসে পথ ধরলাম।
করিমগঞ্জের নবাব মিয়া দাম হাঁকলো
পদ্মার ইলিশ আর সরপুঁটির জন্য।
লোভ হলো, কিন্তু ধারে ঘেঁষতে পারলাম না।
রাস্তার কুকুরটা নীরবে তাচ্ছিল্যে তাকালো আমার দিকে
ও যেন জানে আমি এ শহরের কেউ নই।
ও চলে গেলো প্রিয় ডাস্টবিনের উপচেপড়া ময়লার কাছে।
মিলন মিয়ার ব্যথার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে দেদার
মনের ব্যথা ছাড়া সারাতে পারে সব তা।
আমি নীরবে পাশ কাটালাম তার ট্রলি।
কলতার বদর মিয়ার হাতে বাধা শীতের অতিথি পাখিরা
তাকালো আমার দিকে করুণভাবে।
এমনকি ওরাও জেনে গেছে এ শহরের কেউ নই আমি।
ধীরে-সুস্থে ধুলিভরা রাস্তাতে হেঁটে যখন বাড়িতে পৌঁছে গেলাম
দেখি আমার বাবা অপেক্ষা করছেন আমার জন্য।
আমি নিশ্চিত জানি- এ শহরের কেউ চিনুক না চিনুক
কেউ জানুক না জানুক
আমার বাবা জানেন আমি এ মাটিরই ছেলে।
এসইউ/জেআইএম