আনন্দ পুরস্কার পেলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও লেখক ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৪২৩ বঙ্গাব্দের আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন। তার লেখা বিপুলা পৃথিবী বইয়ের জন্য এ পুরস্কারে ভূসিত হন তিনি। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা ১৯৫৮ সাল থেকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতার এক অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কবি শঙ্খ ঘোষ। পুরস্কারের নির্বাচকমণ্ডলীতে ছিলেন কৃষ্ণা বসু, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার ও সেলিনা হোসেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবী বইটি তার আত্মস্মৃতি। বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির নানা চিত্র ওঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন হর্ষ দত্ত। আনিসুজ্জামানের উদ্দেশে অভিজ্ঞানপত্র পাঠ করেন আনন্দ বাজার পত্রিকার সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি অভিজ্ঞানপত্রে লেখেন, ‘সারস্বত জগতে আদ্যন্ত নিমগ্ন যে অধ্যাপক-গবেষক বাংলা সাহিত্য ও সমাজচিন্তায় বাঙালি মুসলমানের অবদানকে তার ঐতিহাসিক পটভূমিকায় নতুন করে আবিষ্কার করেছিলেন, নতুন দেশের বিশ্ব প্রতিনিধি হয়ে উঠেছিলেন, তার আত্মকথা তো আসলে বৃহৎ বাঙালির সন্ধানে নিয়ত-বিভ্রান্ত দুই বাংলার গৌরবগাথা। এই বিরল অবদানকে সম্মানিত করার জন্য আপনার বিপুলা পৃথিবী গ্রন্থটিকে ১৪২৩ বঙ্গাব্দের আনন্দ পুরস্কার প্রদান করা হলো।’
পুরস্কার পাওয়ার পর অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমি এই পুরস্কার পেয়ে আনন্দিত ও গর্বিত। আমি ২০ বছর ধরে আনন্দ পুরস্কারের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এবার আমি সেই দায়িত্ব থেকে বিদায় নেয়ার পর এবার আমাকেই দেয়া হলো এই পুরস্কার। যেন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের পর এই পুরস্কার প্রাপ্তি। সত্যিই এই পুরস্কার পেয়ে আমি দারুণ আনন্দিত, খুশি।’
১৯৯৪ সালেও আনিসুজ্জামান আনন্দ পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেবারের পুরস্কার ছিল তাকে উপদেষ্টা করে বেরোনো ‘ঐতিহ্যের অঙ্গীকার’ নামে হাজার বছরের বাংলা কবিতা, গান ও নাটক নিয়ে ১৪টি ক্যাসেটের সংকলনের জন্য।
১৯৫৮ সালের ২০ এপ্রিল প্রথম আনন্দ পুরস্কার পেয়েছিলেন সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সমরেশ বসু। প্রতিবছরই আনন্দবাজার পত্রিকা একটি বাংলা বইকে এ পুরস্কার দিয়ে থাকে।
আরএস/এমএস