সব্যসাচী লেখকের জন্মদিন আজ
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮২তম জন্মদিন আজ। ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর তিনি কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ২৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান সৈয়দ হক। এখন পর্যন্ত বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া সর্বকনিষ্ঠ লেখক তিনি।
বাংলা সাহিত্যকে আধুনিকতা ও সমসাময়িকতার সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রে যার অবদান অনস্বীকার্য; কবিতা, গল্প ও নাটকসহ বাংলা সাহিত্যের সব শাখাতেই তার তুমুল বিচরণ ছিল। শৈশবেই সৈয়দ হকের লেখালেখির শুরু। এসএসসি পরীক্ষার আগেই লিখে ফেলেন দুই শতাধিক কবিতা। ১৯৫১ সালে ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ পত্রিকায় ‘উদয়াস্ত’ নামে তার একটি গল্প ছাপা হয়। সেটাই তার প্রথম প্রকাশ হওয়া লেখা।
পঞ্চাশের দশকেই প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। এ সময় চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেন তিনি। তার লেখা চিত্রনাট্যে নির্মিত হয় ‘সুতরাং’, ‘কাগজের নৌকা’, ‘মাটির পাহাড়’, ‘তোমার আমার’। তার উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ অবলম্বনে ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়।
তার কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘একদা এক রাজ্যে’, ‘বৈশাখে রচিত পঙ্ক্তিমালা’, ‘পরানের গহীন ভিতর’, ‘অপর পুরুষ’, ‘এক আশ্চর্য সংগ্রামের স্মৃতি’, ‘অগ্নি ও জলের কবিতা’। উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘নীল দংশন’, ‘মৃগয়ার কালক্ষেপ’, ‘বারো দিনের জীবন’, ‘তুমি সেই তরবারী’, ‘কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন’, ‘নির্বাসিতা’। তার কাব্যনাট্য ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ও ‘নুরলদীনের সারা জীবন’।
সৈয়দ শামসুল হক প্রচুর গানও লিখেছেন। তার লেখা গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘তোরা দেখ দেখ দেখরে চাহিয়া’, ‘অনেক সাধের ময়না আমার’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’, ‘তুমি আসবে বলে কাছে ডাকবে বলে’, ‘এই যে আকাশ এই যে বাতাস’।
এছাড়া অসংখ্য অনুবাদ এবং শিশুসাহিত্যে নিজের প্রতিভার স্বার রেখেছেন সৈয়দ হক। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তার মুকুটে যোগ হয়েছে স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার। বরেণ্য এই লেখক গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন।
এসইউ/পিআর