প্রত্নবেদনা ও অন্যান্য
অন্ধ বিড়াল
অন্ধ বিড়াল এসে প্রতিদিন দুধ খেয়ে যায়
এ-বাড়ি ও-বাড়ি হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত দুপুরে
ডুমুর গাছের নিচে চুপ করে বসে থাকে
অনুমানে গন্ধ শুঁকে শুঁকে মাথা নাড়ায়।
দিনের আলোয় ঝকমকে সূর্যের রোদে
অথবা রাতের বেলায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে
ঝড়-বৃষ্টি প্রহারের ভয় ছাপিয়ে বিড়াল
গৃহিণী রাখেন যে দুধ সেখানে যায়।
শুনেছি বুড়ো এক লোক আমাদের পাড়ায়
রেখে গিয়েছিল শাদা এই জন্মান্ধ বিড়াল
কোনো কারণে দুধ কমে গেলে সকলে বলেÑ
অন্ধ বিড়াল এসে প্রতিদিন দুধ খেয়ে যায়!
হাওয়ায় আঁকা ছবি
যে ছবি এঁকেছি হাওয়ায়
তোমার তুলির ঠোঁটে
ঘাসের ক্যানভাসে তা
আঁকা হয়ে গেছে!
সেদিন এক আত্মপোড়া নদীকে
নদীর কাছে করিয়ে দাঁড়
প্রতিলিপি এঁকেছি তার
জলের মায়ায়...
কী নিখুঁত ঝরঝরে মাটির ওপর
আঁকা হচ্ছে হাওয়ার ছবি
মগজের ক্যালকুলেটরে চলছে
নকশার হিসেব...
এখন দেখছি সেই নকশাটি
প্রিন্টারের খুব কাছাকাছি
ক্লিক করতেই বেরিয়ে আসছে
হাওয়ার মানবী...
বিপরীত
ছোট এক পুকুর
ওর ভেতর কাঁকর ফেলো না
কাঁকর ফেললেই ঢেউ ওঠে
ডুবে ডুবে কাঁকর ছুঁতে চায়
মাটির শরীর...
রচিত হয় দীর্ঘ এক তাপের রচনা...
প্রত্নবেদনা
বেদনা হে, সিঁড়ি বেয়ে ধীরে ধীরে নামো
আমার ঘরের ভেতর ছড়ানো-ছিটানো
কন্যার খেলনার ভেতর লুকিয়ে যেতে পারো!
কেন যে মানুষের ভেতরে আসো?
আর হৃদপিণ্ডে বাসা বেঁধে ছড়িয়ে থাকো রক্তের ভেতর
কচুপাতার জলের মতো টলমলে জীবনে সাজাও কেন
রাত্রিদিন বেদনাবাহিত বালুর সংসার!
তুমি কি মৃত মানুষের হৃদয়ে ঢুকতে পারো না?
মিহি বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে প্রত্নবেদনা
হৃদয়ে হৃদয়ে জাগিয়ে যাও বিরহের বিষণ্ণ সম্ভাবনা
আর চোখের নিচে নিকষ রাত্রির মতো কেন বসে থাকো!
বেদনা হে, সিঁড়ি বেয়ে ধীরে ধীরে নামো
নেমে আর কোথাও যেও না।
এইচআর/পিআর