তাসলিমা আক্তারের কবিতা
ভালোবাসা তোমায় দিলাম
তীব্রতা হোক ভালোবাসার পরিমাপক, জেনো দৈর্ঘ্য নয়
গোটা একটা জীবন ক্ষয়ে যাওয়ার নাম বেঁচে থাকা নয়
যখন তোমার সামনে দাঁড়াবো দেখো, খুলে যাবে স্বর্গের দ্বার
সুসজ্জিত প্রহরীরা জানাবে কুর্নিশ-যেন আমি কৈলাশকন্যা
চোখের চাহনীতে তুলে নেবো খাপখোলা তলোয়ারের ধার নিশ্চিত
রুদ্র তোমার পৌরুষ স্পর্ধা নিমেষেই কেটেকুটে বিখন্ডিত
আঁচল ধরে টানলে খুঁজে পাবে অযন্তা ইলোরার যৌবন অফুরান
রুপোর পানাধারে তরল আগুন, সুরা অথবা হেমলক
লীলাবতীর নাঁচের মুদ্রার সাথে ঝরে পরে ঝিকিমিকি সোনা
সেদিন মেহেদির রং সবুজ হবে আর কাঁচাসোনার হবে নীল
আমি মুঠোভরে গলার হার খুলে ছড়িয়ে দেব শুন্যে বাতাসে
বেনারসি শাড়ির সুক্ষ কারুকাজের ভাঁজে ভাঁজে খুঁজবো
তোমার মদিরতা, খরতাপ কিংবা উন্মাতাল আতরের ঘ্রাণ
পূজারিণী হয়ে হাঁটুগেড়ে আঁজলা পেতে চাইবো, জল দাও-
স্বেদ কিংবা ঘামের পর অবসাদে ভরা শরীরে শরীর
বিনুনি বাঁধতে বাঁধতে বলবো, আজ বড় বুনো ছিলে।
নৈরাকারে লেখা নাম
জলার পাশে সবুজে সাদায় বুনোফুলের ঝোপ দেখেছো তুমি?
যেন তোমার মায়া চুরি করে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে
একটু বাতাস খেলে গেলে শুন্যে মাথা হেলিয়ে দুলিয়ে
কাব্যের স্বরে কথা কয় নিচুস্বরে পরস্পর পরস্পরেরে।
একবার রেলের স্লিপারে পা রেখে হেটে গিয়েছিলাম
একটা বহুবর্ণ প্রজাপতি উড়ছিল তার হলুদ ডানা মেলে
সেদিন সন্ধ্যা নেমেছিল আকাশ আর দশদিশ ছাপিয়ে
মায়াবতী প্রজাপতি যাবার আগে বলে গিয়েছিল, সুখি হোস।
পীলসুজে আগুনের শিখাটি আমার দিকে অবাক তাকিয়েছিল
হঠাৎ হিসহিসিয়ে বলে উঠলো, আগুনের শিখায় পুড়ে মর্
কি যেন বিস্ময়ে আর ক্রোধে আমার ভেতর কেঁপে উঠে
আমি অবলীলায় পুড়ে যাই, পোড়া ধুপের মত সুবাস ছড়াই।
আমি কি সুখে আছি নাকি আগুনের শিখায় পুড়ে মরেছি
দেখে যাও কিশোর, স্মৃতিময়তায় বেঁচে থাকা বড় কষ্টের
বুকের ভেতর শঙ্খ ঝিনুক কলস্বরে বাজে অবিকল, যেমন
তুমি বলতে, ভালোবাসবার জন্য পাশে থাকার প্রয়োজন নেই।
এইচআর/এমএস