মোহাম্মদ রায়হানের শরতের দুটি কবিতা
শরৎ আসিলে
শ্রাবণের বিরহীনির কেশ উড়াইয়া এলো শুভ্র শরৎ,
শিউলিমালা-শঙ্খমালারা রঙে হইয়াছে মাত।
শরৎপ্রাতে তৃষিত মনে ধরিয়াছে গান-ভীষণ,
শরৎ আসিলো মন কাড়িলো লাগিলো মনে ফাগুন।
কাশের গুচ্ছে মেঘ ছেয়েছে সাদা মেঘের ভেলা,
বকের সারি, মেঘের সারি: মন ভোলানো খেলা।
শরৎ-বুকে দুঃখের খাতায়, জমা করে সব দুখ,
কাজলদিঘির শীতল জলে লভি প্রাণের সুখ।
শরৎ-নিশিতে শুক্ল-কালেতে দুগ্ধস্নান চন্দে,
জোস্নাবনে শরৎ-সন্ধ্যায় জাগে নেশা প্রেমে।
শেফালির বনে হিমঝুড়ি ঝরে জড়িয়ে দিয়ে মায়ায়
মেঘ-বাদলের দিন এসে যায় ছাতিম তলার ছায়ায়।
****
বৃষ্টির শাসনে
শরৎ-সন্ধ্যায় শ্রাবণের ঘন-মেঘ ঘুরে-ফিরে,
রবির আলো নিভিয়া মেঘের ভেলারা ভাসে।
সন্ধ্যাবেলায় বারি ঝরে শরতের কান্নার সুরে,
আজ বুঝি মেঘের শাসনে শরৎ এলো চলে!
ভাদর মাসের বৃষ্টি এলো ঝনঝন টিনের চালে,
দোলনচাঁপার রূপে আজ আগুন জ্বলে বৃষ্টি-জলে।
কালো-মেঘের কঠিন কথায় বৃষ্টি ঝরে সঙ্গোপনে,
অম্ভরেতে মেঘ-মেদুরের লুকোচুরি খেলা চলে।
নবীন ধানের মঞ্জুরিতে প্রজাপতির ঘর ভাঙে,
সন্ধ্যা-রাতে অবেলাতে শারদ-লক্ষ্মীর রূপ ঝরে।
গায়ের বধূ শরৎ এলো কেশ ভিজিয়ে শ্রাবণ-জলে,
নিশীথ-রাতে শরৎ নামের বৃষ্টি বহে যার চোখে।
এসইউ/এএসএম