অনিরুদ্ধ সাজ্জাদের তিনটি ছড়া
প্রিয় ছেলেবেলা
শহর পেরিয়ে অনেক দূরের ছোট্ট একটি গ্রামে
সোনাঝরা রোদ পাতার ফাঁকে ভোরের শিশির নামে,
পাখিদের ডাক কিচির মিচির ছন্দে নতুন তাল
সবুজে মোড়ানো মাঠের প্রান্তে গরু থাকে এক পাল।
সেই গাঁয়েতে বেড়ে ওঠা মোর পড়াশোনা পাঠশালে
আম জাম তাল লিচু পেড়েছি, মাছ ধরেছি খালে,
দৌড়-ঝাঁপ আর দলবেঁধে সবে সাঁতরে পুকুর জলে
গল্পের ঝুঁলি খুলে বসতাম বিকালে বটের তলে।
আহা! কী সুখের দিনগুলো সব পেরিয়ে শহরে থাকি
সময়ের খাতা খুলে দেখি আর স্মৃতির পাতায় আঁকি,
চোখে ভেসে আসে রঙিন দিনের নানান রঙের খেলা
আহা শৈশব, আহা প্রিয় গ্রাম, আহা প্রিয় ছেলেবেলা।
****
লাল-সবুজের দেশ
নীলাকাশ মেঠোপথ সবুজের মেলা
চেয়ে থাকি অবিরাম কেটে যায় বেলা,
পাখিরাও নেচে নেচে গেয়ে যায় গান
মিষ্টি সুরের তালে নেচে ওঠে প্রাণ।
মাঝিরাও গান গেয়ে খেয়া করে পার
বাদুরেরা জেগে ওঠে নামলে আঁধার,
মিটিমিটি জ্বলে তারা আকাশজুড়ে
প্যাঁচাটাও ডাক দেয় বসে অদূরে।
ভোর হলে ফুটে ওঠে রক্তিম রবি
দুখিনী মায়ের চোখে বাংলার ছবি,
এইখানে স্বপ্নের হয় না’কো শেষ
লাল-সবুজের যে সোনার স্বদেশ।
****
মেঘের ওপারে বাড়ি
খোকা শুধোয় পাখির কাছে, কোথায় দিচ্ছো পাড়ি
বলল পাখি যাচ্ছি দূরে, মেঘের ওপার বাড়ি।
কত্ত দূরে? পাখির জবাব কিচির মিচির সুরে
যেথায় সবে ইচ্ছামতো বেড়ায় স্বপ্নজুড়ে।
সেথায় ঘটে আকাশ মাটির হৃদয় মিলনমেলা
সূয্যিমামা ফোটায় আলো, মেঘে ভাসায় ভেলা।
লালচে আলোর বন্যা বয়ে অবাক সন্ধ্যা হয়
মস্ত বড় গাছের ডালে সব পাখিরা রয়।
বলল খোকা, তোমার বাড়ি আমায় নেবে সাথে?
আসবো না হয় আবার ফিরে এর পরদিন প্রাতে।
কিচির মিচির, চলো তবে, বললো পাখির ঝাঁক,
জাগো খোকা, এমন সময় মা দিয়েছেন ডাক।
এসইউ/