শাহানাজ শিউলীর বন্যার দুটি ছড়া
ফেনী
দেখলে ফেনী হু-হু করে কেঁদে ওঠে বুকটা,
পানির তলে হারিয়ে গেছে বেঁচে থাকার সুখটা।
আসছে স্রোত ভাটির টানে ভাসছে পশু ঘর-বাড়ি,
বন্ধ সকল ভ্যান, রিকশা আর কত মোটরগাড়ি।
বন্দি সকল নারী-পুরুষ বাস করছে খোলা ছাদে,
নেই বিদ্যুৎ নেই খাদ্য দেখলে ওদের মন কাঁদে।
আমজনতা, আর্মি-সেনা, ছাত্রসমাজ ছুটছে পাশে,
সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে রাখতে ভালো একটু আশে।
জাত-ধর্ম ভুলে গিয়ে একসাথে আজ জীবনযাপন,
বন্যা এসে শিক্ষা দিলো সবাই মানুষ সবাই আপন।
সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে আর কিছু নয়,
সুখে-দুঃখে থাকলে সাথে মানবতারই হবে জয়।
****
আষাঢ়ের ঢল
কালো মেঘের কান্না আষাঢ়ের ঢল,
নদী-নালা থই-থই বর্ষার জল।
ভেসে যায় ঘর-বাড়ি ফসলের মাঠ,
ডুবে যায় বাদলে তটিনীর ঘাট।
গরিবের পেটখানি কাঁপে থরথর,
মেলে না দেখা কোনো তটিনীর চর।
জলভরা উনুনে শূন্য হাড়ি,
বর্ষায় ভেসে যায় কত শত বাড়ি।
ধেণুরা গোয়ালেতে পাড়ে শুধু হাক,
গর্জনে তর্জনে বিদ্যুতের ডাক।
রোগ-শোক, কষ্ট বন্দি জলে,
পাহাড়ের ধস নামে মেঘ গলে গলে।
স্রোতে ভেসে আসে ছোট ছোট গাছ,
পশু-পাখি মানুষের একসাথে বাস।
পাহাড়িদের কণ্ঠে কষ্টের মালা,
আষাঢ়ের ঢলে বাড়ে বিষাদের জ্বালা।
বেশি বেশি করি যদি বৃক্ষ রোপণ,
সুখে সবে একসাথে করবো যাপন।
আষাঢ়ের ঢল থামুক সবুজের বুকে,
হাসিটুকু ফুটে উঠুক মানুষের মুখে।
এসইউ/এএসএম